নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অ’ডুর্ন কয়েকদিনের মধ্যে নতুন অস্ত্র আইন ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।
Published : 18 Mar 2019, 08:41 PM
গত শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে বন্দুকধারীর গুলিতে ৫০ জন নিহতের ঘটনা পুরো নিউ জিল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার পরপরই মন্ত্রিসভার সঙ্গে আলোচনা করে দেশে অস্ত্র আইনে সম্ভাব্য সংশোধনের কথা বলেছিলেন অ’ডুর্ন।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে অ’ডুর্ন বলেন, “ভয়াবহ ওই সন্ত্রাসী হামলার ১০ দিনের মধ্যে আমরা সংশোধিত অস্ত্র আইন ঘোষণা করব। যেটা আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে আরো নিরাপদ করবে বলেই আমার বিশ্বাস।”
মসজিদে হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্ট (২৮) একজন শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী। গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করে গত শনিবার তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছিল। আগামী ৫ এপ্রিল তাকে আবারও আদালতে হাজির করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আরো বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ট্যারেন্টের নামে লাইসেন্স করা পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। যেগুলোর মধ্যে চারটি তিনি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের মার্চের মধ্যে সুপরিচিত অস্ত্র বিক্রেতা কোম্পানি ‘গান সিটি’র অনলাইন থেকে বৈধভাবে কেনেন।
তবে ট্যারেন্ট মসজিদে হামলায় যে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন অটোমেটিক রাইফেল ব্যবহার করেন সেটি তাদের কাছ থেকে কেনা নয় বলে দাবি ‘গান সিটি’র মালিক ডেভিড টিপলের।
তিনি বলেন, “খবরে মসজিদে সামরিক স্টাইলের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র এমএসএসএ ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে, সেটা গান সিটি থেকে কেনা নয়। গান সিটি তার কাছে এমএসএসএ বিক্রি করেনি, যেগুলো করেছে সেগুলো এ-ক্যাটাগরির আগ্নেয়াস্ত্র।”
নিউজিল্যান্ডের অস্ত্র আইন অনুযায়ী, এ-ক্যাটাগরির আগ্নেয়াস্ত্র সেমি-অটোমেটিক হতে পারে, তবে সেগুলো দিয়ে একবারে সাতটির বেশি গুলি করা যাবে না।
ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর প্রধানমন্ত্রী অ’ডুর্ন অস্ত্র আইন সংস্কারের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি তা সমর্থন করেন বলেও জানান টিপল।
অস্ত্র আইনে কী ধরনের সংস্কার হতে পারে সে বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কিছু জানাননি অ’ডুর্ন। তবে তিনি স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানায় বিবিসি।
বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে কঠোর অস্ত্র আইন রয়েছে অস্ট্রেলিয়া তার একটি। ১৯৯৬ সালে পোর্ট আর্থারে এক বন্দুকধারী সেমি-অটোমেটিক এআর-১৫ রাইফেল হাতে ৩৫ জনকে হত্যা করে। ওই হামলার পর নিজেদের অস্ত্রআইন সংস্কার করে অস্ট্রেলিয়া। ক্রাইস্টচার্চের হামলাকারীও একই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছিল।