তখনকার ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের জেরে ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ‘আফ্রিকার শিং’ খ্যাত দেশটির রাজধানী মোগাদিশু থেকে তাদের দূতাবাস সরিয়ে নিয়েছিল।
স্বৈরশাসক সৈয়দ বারিকে উৎখাতের পর দেশটির বিভিন্ন গোত্রপতিরা নিজেদের মধ্যে ভয়াবহ লড়াইয়ে নেমেছিলেন। এরপর থেকে কয়েক দশক ধরে সোমালিয়া ওই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্থায়ী কূটনৈতিক উপস্থিতি’ সেই চেষ্টারই স্বীকৃতি।
“মোগাদিশুতে যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক যাত্রা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং ঐতিহাসিক এ ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোমালিয়ার উন্নতির প্রতিফলন,” মঙ্গলবার দেওয়া বিবৃতিতে এমনটাই বলেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
“দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র এবং আরও স্থিতিশীলতা অর্জনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির বিষয়টিই আমাদের ফিরে আসায় প্রদর্শিত হয়েছে,” বলেছে তারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুতে ডোনাল্ড ইয়ামামোতোকে সোমালিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী দূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে সিএনএন।
ইয়ামামোতো ও তার সহকর্মীরা সোমালিয়ার সরকারের সঙ্গে কাজ করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নয়ের্ত।
পূর্ব আফ্রিকার এ দেশটিকে গত কয়েক বছর ধরেই আল-কায়দাঘনিষ্ঠ জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাব, দুর্ভিক্ষ ও জলদস্যুদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে জঙ্গিদের প্রবল দাপট থাকলেও রাজধানী মোগাদিশুর তুলনামূলক স্থিতিশীল পরিস্থিতি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আকৃষ্ট করছে।
কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নই নয়, তিন দশকের মধ্যে চলতি বছরই প্রথম বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে সাহায্যও পেয়েছে সোমালিয়া। অর্থনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্যে সেপ্টেম্বরে ওই ৮ কোটি ডলারের তহবিল ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের হয়ে যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবার জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাবের বিরুদ্ধে বিমান হামলাও চালিয়েছে।
জঙ্গি এ গোষ্ঠীটি ২০১১ সালে মোগাদিশু ছাড়লেও রাজধানীর আশপাশে এখনো তাদের বেশ শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।