প্রধান বিরোধী দল নিউ ডেমোক্রেসি শনিবার পার্লামেন্টে সিপারাসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও তা ১৫৩-১২৭ ভোটে খারিজ হয়ে যায় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এর ফলে মেসিডোনিয়ার নাম বদল সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে সিপারাস সরকারকে আর কোনো বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে না।
রোববারই দুই দেশের মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে মেসিডোনিয়ার নাম বদল প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য পর্যবেক্ষকদের।
দেশটির নতুন নাম ‘রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া’র ব্যাপারে সিপারাস ও মেসিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জোরান জায়েভ সম্মত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
দুই দশকেরও বেশি সময় আগে মেসিডোনিয়া সাবেক যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীন হয়। তখন থেকেই নাম নিয়ে দেশটির সঙ্গে গ্রিসের বিরোধ চলছিল।
গ্রিসের একটি প্রদেশের নাম মেসিডোনিয়া। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কারণে দেশটির অনেক নাগরিকও নিজেদের মেসিডোনিয়ান হিসেবে পরিচয় দেন।
যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীন মেসিডোনিয়ার সঙ্গে পরিচয়ের এই বিরোধ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে শঙ্কায় প্রথম থেকেই দেশটির নাম বদলে চাপ দিয়ে আসছিল গ্রিকরা।
মেসিডোনিয়া নাম ব্যবহার করে দেশটি গ্রিক অঞ্চলের ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় নিয়োজিত বলেও অভিযোগ এথেন্সের।
নামের এ বিরোধ মেটাতেই ধারাবাহিক আলোচনা চালায় সিপারাস ও জোরান সরকার।
নিউ ডেমোক্রেসিসহ গ্রিসের বেশ কয়েকটি বিরোধীদল নতুন এ চুক্তির বিরোধিতা করছে। সিপারাস চুক্তিতে মেসিডোনিয়াকে বেশি ছাড় দিয়ে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ তাদের।
শনিবার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের বিস্তৃত সংঘর্ষও হয়। যদিও আস্থা ভোট উৎরে যাওয়ার পর চুক্তি স্বাক্ষরে আপাতত আর কোনো আইনী ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না সিপারাসকে।
রোববার দুই দেশের সীমান্তে গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিকোস কোৎজিয়াস ও মেসিডোনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিকোলা দিমিত্রভের মধ্যে চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। সিপারাস ও জোরান সেখানে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানিয়েছে বিবিসি।
অবশ্য চুক্তি স্বাক্ষরের পরও মেসিডোনিয়ার নাম বদল প্রক্রিয়া আটকে যেতে পারে।
সংবিধান অনুযায়ী, নাম পরিবর্তনে সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবরে গণভোট করতে হবে মেসিডোনিয়াকে। দেশটির নাগরিকরা এতে সমর্থন দিলে বদলাতে হবে সংবিধান।
এরপরের ধাপে প্রয়োজন পড়বে পার্লামেন্টের অনুমোদন। মেসিডোনিয়ার প্রেসিডেন্ট জর্জ ইভানভ নাম বদলের আইনে স্বাক্ষর করতে না চাইলে দেখা দেবে নতুন সমস্যা।
সেক্ষেত্রে বিলটি দ্বিতীয় দফা পার্লামেন্টে যাবে। এরপরও সাংসদরা পক্ষে থাকলে স্বাক্ষর করা ছাড়া অবশ্য উপায়ও থাকবে না ইভানভের।
মেসিডোনিয়ার পাশাপাশি গ্রিসের পার্লামেন্টেও নাম বদলের চুক্তি অনুমোদিত হতে হবে, সেটিও খুব সহজে অর্জিত হবে না বলেই ধারণা পর্যবেক্ষকদের।