মালদ্বীপে জরুরি অবস্থা

আদালত-সরকার দ্বন্দ্বে উত্তেজনার মধ্যে মালদ্বীপে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2018, 03:52 PM
Updated : 5 Feb 2018, 05:33 PM

সোমবার জরুরি অবস্থা জারি করা হয় বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। টেলিভিশনে আইনমন্ত্রী আজিমা শাকুর জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

জরুরি অবস্থায় বিচারপতিরা গ্রেপ্তার হলে সেক্ষেত্রে বিশেষ কোনো আইনী সুবিধা তারা পাবেন না।

প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম মুয়াজ আলি বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫৩ তে দেওয়া প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে আগামী ১৫ দিনের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

জরুরি অবস্থায় সুনির্দিষ্ট কিছু অধিকারের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও জনগণের চলাফেরা, চাকরি বা ব্যবসা-বাণিজ্য এর দ্বারা প্রভাবিত হবে না বলে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

“মালদ্বীপ সরকার দেশের জনগণ এবং বিদেশিদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে চায়। মালদ্বীপের জনগণ এবং বিদেশিরা নিরাপদে এখানে বসবাস করতে বা ভ্রমণে আসতে পারবেন।”

গত বৃহস্পতিবার মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদ এবং বিরোধী দলের ১২ এমপিকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে বিচার করে কারাদণ্ড দেওয়াকে ‘অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বর্ণনা করে তাদের মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন।

আদালতের ওই রায়ের পর মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট মালদ্বীপের ৮৫ সদস্যের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায়।

প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মানবে না বলে জানিয়ে দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পার্লামেন্টের কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।

ইয়ামিন মিত্রদের আশঙ্কা সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার বা অভিশংসনের আদেশ দিতে পারে।

কারাদণ্ড পাওয়া ১২ এমপির মধ্যে নয় জন কারাভোগ করছেন। এছাড়া, স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা‍ আব্দুল্লাহ সিনান ও ইলহাম আহমেদ রোববার দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সাবেক প্রেসিডন্ট নাশিদ শ্রীলঙ্কায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে আছেন। তিনি দেশটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট।

কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশটির প্রধান বিরোধী দল মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল বলে জানায় বিবিসি।

বিরোধী দলের এমপি ইভা আব্দুল্লাহ বলেন, জরুরি অবস্থা জারি প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের ‘মরিয়া ভাবের কথাই বলছে’।

তিনি বলেন, “এটা একজন মানুষের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কথাই বলছে, যার মালদ্বীপের জনগণ এবং স্বাধীনতার উপর আর কোনো আস্থা নেই। গণতান্ত্রিকভাবে দেশ শাসনের কোনো অধিকার তার আর নেই এবং তার উচিত দ্রুত পদত্যাগ করা।”

মালদ্বীপের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫৭ক অনুযায়ী, জরুরি অবস্থা জারির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সঙ্কট সমাধানের উপায় প্রস্তাব করে তা পার্লামেন্টে উপস্থাপণ করতে হবে।

সাংবিধানিকভাবে পার্লামেন্টে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

মালদ্বীপ সরকারকে আইনের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।