বিরূপ আবহাওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত নিউ ইয়র্ক এবং নিউজার্সিসহ বিভিন্ন রাজ্যের চার হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
নতুন বছরের প্রথম প্রহরে শুরু হাড় কাঁপানো শৈত্য প্রবাহের অবনতি ঘটে বৃহস্পতিবার ভোরে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রার সঙ্গে যোগ হয় ৫০ থেকে ৬০ মাইল বেগে প্রবাহিত তুষার ঝড়, যাকে স্থানীয়ভাবে ‘বোমা সাইক্লোন’ বলা হচ্ছে।
তীব্র ঠাণ্ডায় ১৬ জনের মৃত্যুর খবর দিয়ে ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এর মধ্যে উইসকনসিনে ছয়জন, টেক্সাসে চারজন নর্থ ক্যারোলাইনায় তিনজন এবং মিজৌরি, মিশিগান ও নর্থ ডাকোটায় একজন করে মারা গেছেন।
এসব এলাকায় ১২ ইঞ্চি থেকে ২৪ ইঞ্চি পর্যন্ত তুষারপাতের কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাতের জাতীয় আবহাওয়া বার্তায় বলা হয়, বস্টন ও লং আইল্যান্ডের উপকূলীয় এলাকায় ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসও হয়েছে। গলে যাওয়া বরফের পানিতে ডুবে যায় বস্টনের রাস্তা।
নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ম্যাসাচুসেটস ও কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। লোকজনকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন রাজ্য গভর্নরেরা।
নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির বিভিন্ন বিমানবন্দরের দুই হাজার ফ্লাইটসহ বস্টন, ফিলাডেলফিয়া, ভার্জিনিয়া এলাকার চার হাজার ফ্লাইট বাতিল করতে হয় বলে জানান পোর্ট অথরিটির নির্বাহী পরিচালক রিক কটন।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে ২৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি ট্যাক্সি চালকের ৯০ শতাংশ দুর্যোগের কারণে কাজে যেতে পারেনি।
নিজেদের বসবাসের এলাকায় তুষার ঝড়ে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যেতে দেখেছেন পেনসিলভেনিয়ার মেলবোর্ন সিটিতে বাস করা বাংলাদেশি মোহাম্মদ নূরল হাসান।
নিউ ইয়র্কের হাডসন সিটির কাউন্সিলম্যান শেরশাহ মিজান এবং লং আইল্যান্ডের লিন্সব্রুক সিটির ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বাদলও তাদের এলাকায় তুষার ঝড়ের ভয়াল রূপ দেখেছেন বলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
তারা জানান, তাপমাত্রা নেমে হিমাঙ্কের নিচে আসায় লোকজন ঘরের বাইরে আসেনি। সড়ক-মহাসড়কে পুলিশ আর অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া যান চলাচল ছিল একেবারেই কম।
নিউ ইয়র্ক সিটির বাস ও সাবওয়ে চলাচল করলেও যাত্রীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা।
আসছে রোববার পর্যন্ত আক্রান্ত এলাকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচেই থাকবে বলে আবহাওয়ার বুলেটিনে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।