ইরাক সীমান্তবর্তী কেরমানশাহ প্রদেশে রোববার রাতে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত সাড়ে চারশ মানুষের মৃত্যু হয় বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আহত হয়েছে সাত হাজারের বেশি মানুষ।
কেরমানশাহ প্রদেশে রাতে তাপমাত্রা প্রায় মাইনাসের কাছকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। এর মধ্যেই দুর্গতদের টানা দ্বিতীয় রাত খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে। তুলনামূলক ভাগ্যবানরা অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছে।
কুর্দি শহর সানানদাজের বাসিন্দা রোজান মেশকাত টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, “ঠান্ডার আরও অনেক মানুষ মারা যাবে। আমার পরিবার সারপোল-ই জাহাবের কাছে একটি গ্রামে বাস করে। আমি এমনকি সেখানে যেতেও পারছি না। আমি জানিনা তারা বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে।”
ইরাকে ভূমিকম্পে নয় জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি মঙ্গলবার সকালে ভূমিকম্প দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ‘তার সরকার যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যা সমাধানে সর্বশক্তি নিয়োগ করবে’ বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন জানায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ১৯৩ বার পরাঘাত অনুভূত হয়েছে। আতঙ্কে লোকজন বাড়িতে ফিরছে না।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সারপোল-ই জাহাব শহরের বাসিন্দা এক নারী বলেন, তাঁবুর অভাবে তার পুরো পরিবার ঠাণ্ডায় খোলা আকাশের নিচে বাস করছে।
“আমাদের সাহায্য প্রয়োজন। আমাদের সব কিছু প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষের আরও দ্রুত ত্রাণের ব্যবস্থা করা উচিত।”
ইরানের ইমার্জেন্সি মেডিসিন সার্ভিসের প্রধান পীর-হোসাইন কলিভান্ড বলেন, “কেরমানশাহ প্রদেশে উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে।”
ভূমিকম্পে সারপোল-ই জাহাব জেলার প্রধান হাসপাতালটি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আহতদের আশেপাশের প্রদেশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুরুতর আহত কয়েকজনকে তেহরানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও খবরে জানানো হয়েছে।
ইরানের রেড ক্রিসেন্ট জানায়, গৃহহীনদের তাঁবু সরবরাহ করা হলেও তা যথেষ্ট নয়। এছাড়া পানি ও বিদ্যুতের অভাবেও দুর্ভোগ বাড়ছে। কোথাও কোথাও বড় বড় পাথর পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনকে কাসর-ই শিরিন এর গভর্নর ফারামার্জ আকবরি বলেন, “কয়েকটি গ্রামে লোকজনের কাছে দ্রুত খাবার, পানি ও আশ্রয় পৌঁছানো ভীষণ জরুরি।”