ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় ব্যাপক উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।
ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা ভূমিকম্পে দেশটিতে ৪১৩ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দেশটিতে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা সাড়ে চারশ ছাড়িয়েছে। এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে এটাই ইরানে সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী ভূমিকম্প।
বিবিসি বলছে, বিশ্বে এ বছর এটাই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানিকর ভূমিকম্প।
নিহতদের মধ্যে কয়েকজন সেনা সদস্য ও সীমান্তরক্ষী রয়েছেন বলে ইরানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরাক সীমান্তের প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে কেরমানশাহ প্রদেশের সারপোল ই জাহাব জেলা।
ইরানের পশ্চিমের ওই পাহাড়ি এলাকায় তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। সেখানকার কয়েকটি গ্রাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামগুলোতে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা ইটের বাড়িগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকা পড়ে আছে বলে ধারণা উদ্ধারকর্মীদের।
ধ্বংসস্তুপের নিচে জীবিত কেউ আটকা পড়ে আছে কি না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে তারা।
উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে এক নারী ও তার দুই শিশু সন্তানকে জীবিত উদ্ধার করেছে বলেও খবর দিয়েছে ইরানের গণমাধ্যম।
স্থানীয় সময় রোববার রাত সোয়া ৯টার দিকে (১৮:১৮ জিএমটি) আঘাত হানা এই ভূমিকম্পটি ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ছিল বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।
ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ইরান সীমান্তবর্তী ইরাকের আধা স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্থানের সুলাইমানিয়া প্রদেশের পেঞ্জভিনে। এলাকাটি ইরানের সঙ্গে প্রধান সীমান্ত ক্রসিংয়ের সন্নিকটে।
সীমান্ত সংলগ্ন সারপোল ই জাহাব শহরের প্রধান হাসপাতালটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে শত শত আহত মানুষকে চিকিৎসা দিতে রীতিমত লড়াই করতে হচ্ছে।
ভূমিকম্প দুর্গত কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে এক ব্যক্তি বলেন, “আমাদের আশ্রয় প্রয়োজন। ত্রাণ কোথায়? সাহায্য কোথায়?”
ভূমিকম্পে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের রেড ক্রিসেন্ট।
ভূমিকম্পে ইরাকে নয়জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে রেড ক্রিসেন্ট, আহত হয়েছে পাঁচ শতাধিক।
এই ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর দিয়ারবাকিরও কেঁপে ওঠে। তবে সেখানে থেকে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ইরানের ভূমিকম্প বিষয়ক কেন্দ্র জানিয়েছে, শতাধিক পরাঘাত রেকর্ড করেছে তারা এবং আরও পরাঘাত হবে বলে আশঙ্কা করছে।
ভূপৃষ্ঠের ৩৩ দশমিক নয় কিলোমিটার গভীরে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পটি ইসরায়েল ও কুয়েতেও অনুভূত হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।