সোমবার এই শহরটিতে গত পাঁচ মাস ধরে চলা তীব্র লড়াই শেষের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেলফিন লোরেঞ্জানা।
মারাউইর এই লড়াইকে গত কয়েক বছরের মধ্যে ফিলিপিন্সের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা সঙ্কট হিসেবে হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
দেশটির ক্লার্ক শহরে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এক বৈঠকের ফাঁকে তিনি জানান, মারাউই শহরের কেন্দ্রস্থলের কয়েকটি ভবনে অবস্থান নিয়ে যে বন্দুকধারীরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল সেনারা তাদের পরাজিত করার পর সামরিক অভিযান শেষ হয়েছে।
“মারাউইতে আর কোনো জঙ্গি নেই,” বলেন তিনি।
তবে তিনি এসব কথা বললেও মারাউইতে থাকা রয়টার্সের সাংবাদিক সোমবার সারা সকালজুড়ে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলির শব্দ এবং কামানের গোলার শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন।
পাদিল্লা জানান, অবশিষ্ট বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পনে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিল সেনারা, কিন্তু তারা আত্মসমর্পন করতে অস্বীকার করে। এখানে যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মধ্যে দুজনের দুই স্ত্রীও রয়েছেন।
আইএসপন্থি বিদ্রোহীরা মারাউই শহর দখল করে নেওয়ার পর স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিল ফিলিপিন্স। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তৎপরতা চালাতে মিন্দানাও দ্বীপের মুসলিম অধ্যুষিত এই এলাকাটিকে আইএসপন্থিরা নিজেদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে এমন উদ্বেগও ছড়িয়ে পড়েছিল।
তরুণ যোদ্ধাদের সংগ্রহে বিদ্রোহীদের সামর্থ্য, ব্যাপক অস্ত্রের মজুদ ও ১৫৪ দিন ধরে ফিলিপিন্স সামরিক বাহিনীর স্থল ও বিমান হামলা ঠেকিয়ে রাখায় এই উদ্বেগ আরো বেড়ে গিয়েছিল।
ফিলিপিন্সের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল এদুয়ার্দো আনো জানিয়েছেন, সোমবার মারাউইয়ের যুদ্ধক্ষেত্রের দুটি ভবন ও একটি মসজিদ থেকে অন্ততপক্ষে ৪২ জন বিদ্রোহীর লাশ পাওয়া গেছে।
গত সপ্তাহে রাতে চালানো এক অভিযানে আইএসের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ‘আমির’ বলে কথিত ইসনিলোন হ্যাপিলোন ও মউত জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান ওমরখৈয়াম মউত নিহত হওয়ার পর থেকে মারাউই পুনরুদ্ধারে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায় ফিলিপিন্সের সামরিক বাহিনী।
লড়াইয়ে জঙ্গিজোটটির অপর নেতা ও অর্থের যোগানদাতা মালয়েশীয় নাগরিক মাহমুদ আহমদও নিহত হয়েছেন বলে ধারণা সামরিক বাহিনীর।
লোরেঞ্জো জানিয়েছেন, সেখানে আরো সামরিক অভিযান চালানো হতে পারে এবং ছয় ব্যাটেলিয়ন সেনা মারাউইতে মোতায়েন থাকবে। তবে ওই সামরিক অভিযানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।