থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা দেশ ছেড়ে ‘পালিয়ে’ দুবাই চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন তার দলের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য।
Published : 25 Aug 2017, 11:01 AM
সর্বোচ্চ আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তিনি দেশ ছাড়েন বলে শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন ওই সদস্য।
দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে একটি মামলার শুনানিতে শুক্রবার আদালতে হাজির না হওয়ায় ইংলাকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এদিন ওই মামলার রায় দেওয়ার কথা ছিল। এর একদিন পরই তার দুবাই পালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেল।
ইংলাকের পুয়ে থাই পার্টির একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে থাইল্যান্ড ছেড়ে ইংলাক সিঙ্গাপুর হয়ে দুবাইয়ে ভাইয়ের বাড়ি পৌঁছান।
গণমাধ্যমে কথা বলার জন্য দল কর্তৃক মনোনীত না থাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুয়ে থাই পার্টির ওই জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন “আমরা শুনেছি তিনি প্রথমে কম্বোডিয়া যান, তারপর সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে দুবাইয়ে চলে যান। তিনি নিরাপদেই সেখানে পৌঁছেন এবং এখনো সেখানে অবস্থান করছেন।”
তবে থাই পুলিশের ডেপুটি ন্যাশনাল চিফ জেনারেল শ্রিভারা রাঙ্গসিব্রাহ্মানাকুল জানান, ৫০ বছর বয়সী ইংলাকের দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। এই বিষয়ে ভালোমতো খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে খবর নিতে রয়টার্সের এক সাংবাদিক দুবাইয়ের বিলাসবহুল এমিরেটস হিলস কমিউনিটিতে থাকসিনের বাড়িতে গেলেও নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেননি।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে থাকসিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায় দুবাইয়ে তার মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
থাইল্যান্ডের সামরিক সরকারের মুখপাত্রও ইংলাকের অবস্থান বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
অবশ্য মামলার শুরু থেকেই ইংলাক গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন।
২০১১ সালে থাইল্যান্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন ইংলাক।
চালে ভর্তুকি প্রকল্পে লাখ লাখ ডলার অনিয়মের অভিযোগ উঠার পর ২০১৪ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
ইংলাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিজের সমর্থক কৃষকদের খুশি করতে চাল ক্রয় প্রকল্পে আন্তর্জাতিক বাজার দরের চেয়ে বেশি মূল্যে চাল কিনেছিল ইংলাক সরকার। এতে সরকারি গুদামে চাল উপচে পড়ে, কিন্তু বেশি দামে কেনায় আন্তর্জাতিক বাজারে সেই চাল রপ্তানি করা যায়নি।
বর্তমানে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের অভিযোগ, এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের অন্তত ৮শ’ কোটি ডলার অপচয় হয়েছে।
চাল ক্রয় সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় শুক্রবারই ইংলাকের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রীকে ৪২ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
রায়ের দিন ব্যাংককের আদালতের বাইরে ইংলাকের হাজার তিনের সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
২০০১ সালের পর থেকে হওয়া থাইল্যান্ডের প্রতিটি নির্রাচনে সিনাওয়াত্রা পরিবারের নেতৃত্বাধীন বা সমর্থনপুষ্ট দল জয়ী হয়েছে। দরিদ্রদের মধ্যে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করে আসছেন রাজধানী ব্যাংককের অভিজাতরা।