দলের প্রবীণ রাজনীতিবীদদের সরাসির বিরোধিতার পর আবারও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বাক্যবাণে জর্জরিত হয়েছেন রিপাবলিকান দল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
Published : 04 Mar 2016, 08:27 PM
ডেট্রয়েটে বৃহস্পতিবারের বিতর্কে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকা ট্রাম্পকে রক্ষণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেছে।
রিপাবলিকান দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মতে, ট্রাম্প দলের জন্য বোঝা এবং তিনি নভেম্বরের নির্বাচনে হেরে যাবেন। তারা রিপাবলিকান ভোটারদের ট্রাম্পকে পরিত্যাগের আহ্বানও জানান।
যদিও এখন পর্যন্ত হওয়া বিভিন্ন রাজ্যের প্রাইমারিতে রিপাবলিকান দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছেন ট্রাম্প।
১ মার্চের সুপার টিউসডে তেও ১১টি রাজ্যের মধ্যে সাতটিতেই জিতেছেন আবাসন ব্যবসায়ী ট্রাম্প।
শুরুতে বেশ অনমনীয়, আক্রমণাত্মক ও দাম্ভিক মন্তব্য করা ট্রাম্প কিছু কিছু বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “নমনীয়তা শক্তিরই অংশ।”
একদিন আগে দলটির সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিট রমনি (২০১২ সালের প্রার্থী) ধনকুবের ট্রাম্পকে গুণ্ডা, প্রতারক, লোভী ও স্ত্রী-বিদ্বেষী বলে বর্ণনা করেন।
রমনিকে ‘ব্যর্থ প্রার্থী’ বলে ট্রাম্পও এ সমালোচনার জবাব দেন।রমনির মন্তব্যের সূত্র ধরেই ডেট্রয়েটে রিপাবলিকান প্রার্থীদের বিতর্ক শুরু হয়।
নির্বাচনী প্রচার শুরুর সময় অধিকাংশ রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পকে গুরুত্বের সঙ্গে না নিলেও এখন তার মনোনয়ন-সম্ভাবনা চিন্তা করে সব মহল থেকেই তার বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণ শুরু হয়েছে।
ডেট্রয়েটে ফক্স নিউজ আয়োজিত বিতর্কে রিপাবলিকান দলের চতুর্থ প্রার্থী হিসেবে ওহাইও গভর্নর জন কাসিচও অংশ নেন।
ট্রাম্পকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিও। তথাকথিত ট্রাম্প বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রতারণার জন্য ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করেন তিনি।
ওদিকে, ট্রাম্পও রুবিওকে ‘লিটিল রুবিও’ এবং আরেক প্রার্থী টেক্সসাসের সিনেটর টেড ক্রুজকে ‘লায়ার টেড’ বলে ব্যঙ্গ করেন।
ট্রাম্প ইউনিভার্সিটি নামে অনলাইন ভিত্তিক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ব্যবসা মন্দা হওয়ায় সেটি বন্ধ করে দেওয়ার পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা হয়। যদিও মামলায় শেষ পর্যন্ত নিউ ইয়র্কের এই ব্যাবসায়ী জয়লাভ করেন।
ওই মামলার প্রসঙ্গ টেনেই রুবিও বলেন, “তিনি (ট্রাম্প) যেভাবে প্রতারণা করে জনগণের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন ঠিক একই ভাবে জনগণের ভোটও হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।”
এদিনের বিতর্কে সিরিয়ার শরণার্থী, আফগানিস্তানে যুদ্ধ ও জর্জ ডব্লিউ বুশ সম্পর্কে নিজের আগের অবস্থান থেকে সরে আসার বিষয়ে ফক্স নিউজ প্যানেলের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ট্রাম্পকে।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমার অন্তর অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু আমি এমন কোনো সফল ব্যক্তিকে দেখিনি যিনি নমনীয় নন বা যার কিছুমাত্রায় নমনীয়তা নেই।”
বৃহস্পতিবারের এই বিতর্কে ফের ফক্স নিউজের সঞ্চালক মেগিন কেলির মুখোমুখি হতে হয়েছে ট্রাম্পকে।
প্রথম প্রাইমারির বিতর্কে কেলির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ানোর পর এই নারী সঞ্চালককে ‘নির্বোধ সুন্দরী’ বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
তবে এদিন কেলির প্রথম প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে ট্রাম্প হাসিমুখে তার সৌন্দর্যের প্রশংসা করেন।