হামলায় জেইউআই-এফ এর অন্যতম শীর্ষ নেতা মওলানা জিয়াউল্লাহ জানসহ ৩৯ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
Published : 30 Jul 2023, 08:11 PM
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বাজাউর জেলায় দেশটির রাজনৈতিক দল জামিয়াত উলেমা ইসলাম-ফজল (জেইউআই-এফ) এর সম্মেলনে বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৩৯ জন নিহত এবং ১২০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রিয়াজ আনোয়ার হতাহতের সর্বশেষ সংখ্যা জানিয়ে বলেন, “হাসপাতাল থেকে পাওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে আমি ৩৯ জন নিহত এবং ১২৩ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করছি। আহতদের মধ্যে ১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
প্রাদেশিক গভর্নর হাজি গুলাম আলিও নিহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করেন।
এখন পর্যন্ত এ হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। তবে পুলিশ বিবিসিকে বলেছে, তারা প্রাথমিকভাবে যেসব আলামত পেয়েছে তাতে এটা আত্মঘাতী হামলা হতে পারে।
বিস্ফোরণ স্থলে উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে এবং আহত সবাইকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান স্থানীয় কর্মকর্তারা।
এর আগে প্রাদেশিক সরকারের তথ্যমন্ত্রী ফিরোজ শাহ জামাল জিও টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বাজাউর এবং আশেপাশের জেলার হাসপাতালগুলোকে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
“আমরা গুরুতর রোগীদের সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে পেশওয়ার এবং অন্যান্য আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
“আহতদের চিকিৎসা সেবা দেওয়াই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। পুলিশ বিস্ফোরণস্থল ঘিরে রেখেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থা জরুরি উদ্ধার কাজে আমাদের সহায়তা করছে।”
রোববার জেলার আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী ছোট্ট শহর খারে ওই সম্মেলন চলছিল বলে জানায় দেশটির ইংরেজি ভাষার দৈনিক ডন।
বিস্ফোরণে জেইউআই-এফ এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা মওলানা জিয়াউল্লাহ জান নিহত হয়েছেন বলে ডন ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন বাজাউর জেলা জরুরি কর্মকর্তা সাদ খান।
ওই সম্মেলনের খবর সংগ্রহ করতে ডনের একজন প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে উপস্থিতি ছিলেন। তিনি জানান, আহতদের মধ্যে স্থানীয় একজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সম্প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিস্ফোরণের পর আতঙ্কগ্রস্ত লোকজন ঘটনাস্থলে ভিড় করে আছেন। কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স সেখান থেকে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। পরে পুলিশের বড় একটি দল ওই এলাকা ঘিরে ফেলে।
জেইউআই-এফ প্রধান মওলানা ফজলুর রেহমান দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া সরকারের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
তিনি নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে আরো বলেন, আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে তিনি প্রার্থনা করছেন। এছাড়াও, দলের কর্মীদের দ্রুত হাসপাতালগুলোতে গিয়ে আহতদের জন্য রক্তের ব্যবস্থা করার আহ্বানও জানান।
ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী রহিম শাহ ডন ডটকমকে বলেন, বিস্ফোরণের সময় সম্মেলনে পাঁচ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
“আমরা বয়ান শুনছিলাম। হঠাৎই শক্তিশালী বিস্ফোরণের ধাক্কায় আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফেরার পর দেখি চারিদিকে রক্ত। লোকজন চিৎকার করছে, এমনকি আমি গুলি চলার শব্দও শুনতে পেয়েছি।”
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানের শত্রু এবং তাদের নির্মূল করা হবে।”