কুয়ালালামপুরের কাছে ভূমিধসে নিহত ২১, নিখোঁজ ১৪

উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আবর্জনা, উপড়ে পড়া গাছ ও কাদা সরিয়ে জীবিতদের বের করে আনার চেষ্টা করছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2022, 04:22 AM
Updated : 16 Dec 2022, 04:22 AM

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কাছে ভূমিধসের এক ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ১৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোররাত ৩টার দিকে একটি ক্যাম্পসাইটে ভূমিধস হয়। সে সময় সবাই ঘুমিয়ে ছিল বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।  

শতশত উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আবর্জনা, উপড়ে পড়া গাছ ও কাদা সরিয়ে জীবিতদের বের করে আনার চেষ্টা করছেন।

দেশটির দমকল বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সেলাঙ্গর রাজ্যের এক সড়কের পাশে ক্যাম্পিং করার ব্যবস্থা থাকা একটি অর্গানিক খামারে ঘটনাটি ঘটেছে।

খামারের ম্যানেজার জানান, রাতে ক্যাম্পটিতে থাকার জন্য যাদের নাম নিবন্ধন করা হয়েছিল তার মধ্যে অন্তত ৩০ জন শিশু এবং ৫১ জন প্রাপ্তবয়স্ক।

বাতাং কালি জেলার পুলিশ প্রধান সুফিয়ান আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, নিহতরা সবাই মালয়েশীয় এবং তাদের মধ্যে প্রায় ৫ বছর বয়সী একটি শিশু আছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ১৪ জন এখনও নিখোঁজ বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মালয়েশিয়ার দমকল বিভাগ জানায়, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪ শিশু আছে।

ওদিকে, নিউ স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০ জনের বেশি স্কুল টিচার এবং পরিবারের সদস্যরা ক্যাম্প এলাকায় ছিল।

ক্যাম্পসাইটটির আনুমানিক ৩০ মিটার উঁচু একটি পাহাড়ি ঢাল থেকে ভূমিধস হয়ে প্রায় এক একরের মতো এলাকাকে মাটিচাপা দিয়েছে, জানিয়েছেন দমকল বিভাগের পরিচালক নোরাজাম খামিস।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রাজধানী কুয়ালালামপুরের ৫০ কিলোমিটার উত্তরে বাতাং কালি জেলার মনোরম পার্বত্য অঞ্চল গেন্টিং হাইল্যান্ডসের পাশেই দুর্যোগটি ঘটেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি গেন্টিং হাইল্যান্ডস একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।   

প্রত্যক্ষদর্শী তেহ লিন জুয়ান (২২) জানান, ভূমিধস যখন হয় তখন তিনি আরও ৪০ জনের সঙ্গে ক্যাম্পটিতে ছিলেন। তিনি জানান, তার এক ভাই মারা গেছে এবং আরেকজন হাসপাতালে আছে।

“বজ্রপাতের মতো তীব্র শব্দ শুনলাম, কিন্তু এরপরই পাথর পড়া শুরু হয়। অনুভব করলাম, তাঁবু আলগা হয়ে যাচ্ছে আর আমাদের চারপাশে মাটি এসে পড়ছে। সৌভাগ্যক্রমে আমি তাঁবু থেকে বের হয়ে নিরাপদ একটি স্থানে চলে যেতে পেরেছিলাম। আমি ও আমার মা হামাগুড়ি দিয়ে সরে এসে নিজেদের রক্ষা করেছি,” স্থানীয় একটি দৈনিককে বলেছেন তিনি।

যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের মধ্যে গর্ভবতী একজন নারী আছেন বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জালিহা মুস্তাফা।

মালয়েশিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধ রাজ্য সেলাঙ্গরে এর আগেও বেশ কয়েকটি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। বন উজাড় ও পাহাড় কাটার কারণেই এসব ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

অঞ্চলটিতে এখন বর্ষাকাল চললেও ওই রাতে ভারি বৃষ্টি বা ভূমিকম্পের মতো কোনো কিছু হয়নি।  

এক বছর আগে প্রবল বৃষ্টিতে দেশটির সাতটি রাজ্যজুড়ে দেখা দেওয়া বন্যায় প্রায় ২১ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।