জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে যুক্তরাজ্যের অনেক মানুষ নিজেদের প্রিয় পোষা প্রাণীকে রাস্তায় ফেলে যাচ্ছেন।
হ্যারিয়ট নামে এমনই একটি কালো রঙের ছোট্ট কুকুরকে (ইংলিশ ককার স্পানিয়েল) লন্ডনের একটি ব্যস্ত রাস্তায় এলোমেলো দৌড়া-দৌড়ি করতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা একটি গাড়ি থেকে কুকুরটিকে ঠেলে বের করে দিতে দেখেছেন।
হ্যারিয়টের মত আরো ২০৬টি কুকুর ও ১৬৪টি বেড়ালকে গত কয়েক সপ্তাহে লন্ডনের রাস্তা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
‘ব্যাটারসি’ নামে প্রাণীদের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ‘রিহোমিং সেন্টারে’ এখন সেগুলোর জায়গা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের অন্যান্য নগরীতেও একই ঘটনা ঘটছে। এবং এর প্রধান কারণ জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া। অন্তত ১৯৬০ এর দশকের পর ব্রিটিশদের জীবনযাত্রার ব্যয় সামলাতে এতটা হিমশিম খেতে হয়নি।
যার ফলে পোষা প্রাণীদের খাবারের খরচের পাশপাশি সেগুলোর চিকিৎসার পেছনে শত শত পাউন্ড ব্যয় করার মত অবস্থায় যুক্তরাজ্যের অনেক নাগরিকেরই এখন আর নেই। তাই তারা নিজেদের পোষা প্রাণী পরিত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
লন্ডনে ব্যাটারসি এর ‘রিহোমিং সেন্টারের’ ব্যবস্থাপক স্টিভ ক্রাডক রয়টার্সকে বলেন, ‘‘মানুষজনের তাদের পোষা কুকুরকে ব্যাটারসি তে ছেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি প্রধান কারণ হয়ে উঠছে। যা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।”
সাপ বা গিরগিটির মত প্রাণী যারা পোষেন তাদের খরচ আরো বেশি। কারণ, এসব প্রাণীর জন্য বিশেষ আবাসস্থল ও খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়।
সম্প্রতি সরীসৃপ কেনাবেচার একটি দোকানের সামনে বালিশের কাভারের ভেতর ভরে ফেলে যাওয়া তিনটি সাপ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে একটি ৮ ফুট লম্বা বিষাক্ত বোয়া সাপও রয়েছে।
প্রাণীদের প্রতি যেসব দেশের মানুষের গভীর ভালোবাসা রয়েছে যুক্তরাজ্য তার একটি। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় একাকিত্ব কাটাতে সেখানে পোষা প্রাণীর চাহিদাও বেড়েছিল। কিন্তু গত বছর জানুয়ারি থেকে যুক্তরাজ্যে ইউটিলিটি বিল বাড়তে শুরু করে, এখন যা প্রায় তিনগুণ হয়ে গেছে। কিন্তু মানুষের আয় বাড়েনি।