Published : 13 Feb 2024, 11:24 PM
গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি করা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে মিশরের রাজধানী কায়রোয়। আলোচনায় বসেছেন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও কাতারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মিশরের গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
গাজার মিশরীয় সীমান্ত নগরী রাফাহতে স্থল অভিযান না চালানোর জন্য ইসরায়েলের ওপর বাড়তে থাকা আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই যুদ্ধবিরতি আলোচনা।
ছোট্ট এই রাফাহ নগরীতে আশ্রয় নিয়ে আছে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। সেখানে ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হওয়ার আশঙ্কায় তারা আতঙ্কিত।
ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত সপ্তাহে যে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছিল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তারপরও যুদ্ধবিরতি নিয়ে কায়রোয় আলোচনা চলছে। নেতানিয়াহু তার গোয়েন্দা প্রধানকে আলোচনায় পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের গণমাধ্যম।
বিবিসি জানায়, গাজায় কয়েক মাসের মধ্যেই হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘পূর্ণ জয়’ সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন নেতানিয়াহু।
এরপরই তিনি ইসরায়েলি সেনাদেরকে স্থলঅভিযান সম্প্রসারণের নির্দেশ দেন এবং রাফাহ নগরীতে লুকিয়ে থাকা হামাস বন্দুকধারীদের পরাজিত করার অঙ্গীকার করেন।
কিন্তু বেসামরিক বহু মানুষ রাফাহ তে আশ্রয় নিয়ে থাকায় সেখানে ইসরায়েলের স্থল অভিযানে বহু মানুষ নিহত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও রাফাহ’র বেসামরিক মানুষদের সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাফাহ’য় সম্প্রতি কয়েক দিনে ইসরায়েল তুমুল বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে ৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহতের খবর জানিয়েছে সেখানকার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার রাতভর ইসরায়েলের ট্যাংক থেকে রাফাহ’র পূর্বাঞ্চলে গোলা হামলায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বলে অধিবাসীরা জানিয়েছে।
তারা জানায়, সম্প্রতি কয়েকদিনে রাফাহ নগরীতে ইসরায়েলের গোলা ও বিমান হামলার পর বাস্তুচ্যুত বেশ কিছু মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেছে।
ওদিকে কায়রোয় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় যোগ দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান উইলিয়াম বার্নস, মিশরের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানি।
সাময়িক একটি যুদ্ধবিরতির কর্মকাঠামো হাতে আছে। আর তা হচ্ছে, ইসরায়েলের জেলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং কিছু সময়ের জন্য লড়াইয়ে বিরতি।
কাতার ও মিশর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি হওয়ানোর চেষ্টা করছে।
গতবছর ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তিকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে প্রায় ১২শ মানুষকে হত্যা করে। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরো প্রায় ২৫৩ জনকে।
ওই দিন থেকে গাজায় তীব্র আকাশ হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের হাতে এখনও ১৩০ জিম্মি রয়েছে বলে দাবি ইসরায়েলের।