কংগ্রেসের ‘হাত ধরতে’ রাজি মমতা, চান পশ্চিমবঙ্গে বিরোধের নিষ্পত্তি

তবে কংগ্রেসকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি দলটির নীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2023, 04:25 PM
Updated : 15 May 2023, 04:25 PM

ভারতের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার নিজ কার্যালয় নবান্নে এক সংবাদ সম্মেলনে মমতা এ কথা বলেন বলে জানায় কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার।

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য কংগ্রেসকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি দলটির নীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

বলেছেন, ‘‘যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে ওদের সমর্থন করবো। কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু ওদেরও অন্য দলকে সমর্থন করা উচিত।

‘‘আপনারা রোজ এখানে (পশ্চিমবঙ্গে) আমাদের সঙ্গে লড়াই করবেন, এটা তো ঠিক না।”

সম্প্রতি কর্ণাটকের বিধানসভায় নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে কংগ্রেস। বিধানসভার ২২৪টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস জিতেছে ১৩৫টি আসনে। বিজেপি পেয়েছে ৬৫টি আসন এবং জেডি(এস) হাতে গেছে ১৯টি আসন।

যা বিজেপি বিরোধী দলগুলোকে পুনরায় আশান্বিত করে তুলেছে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা আবার একজোট হতে চাইছে।

অতীতে মমতাকে বহুবার বিজেপির সরকারকে হটাতে বিরোধী ঐক্য গঠনে সক্রিয় হতে দেখা দেছে। ২০২১ সালে তৃতীয়বারের মত পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসার পর তিনি দিল্লি গিয়ে বিজেপি বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। যে বৈঠকে কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধীও উপস্থিত ছিলেন।

কিন্তু সে বৈঠক সফল হয়নি। তারপর সময় যত গড়িয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনের সময় তো দুই দল প্রকাশ্যেই বিরোধে জড়িয়েছে।

পরে আরো বেশ কিছু ঘটনা দুই দলের মধ্যে তিক্ততা বাড়িয়েছে।

কিন্তু মোদী পদবি নিয়ে মন্তব্যের জেরে সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর পার্লামেন্টে সদস্য পদ খারিজ হলে এক টুইট বার্তায় মোদী সরকারের সমালোচনা করে মমতা কার্যত রাহুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যদিও ওই টুইটে রাহুলের নাম তিনি উল্লেখ করেননি।

গত শনিবার কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় নিয়েও  কথা বলেছেন মমতা।

যদিও তিনি কংগ্রেসের জয় নিয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করেননি। তবে তখন থেকেই কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। এর দুইদিনের মাথায় সোমবার মমতা সরাসরি কংগ্রেসকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানালেন।

কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা সোনিয়ার সঙ্গে মমতার সুসম্পর্কের কথা সবাই জানে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার তৃণমূলের সম্পর্ক ‘অম্ল মধুর’।

জাতীয় নির্বাচনে কংগ্রেসকে সমর্থন জানালেও তাই পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস নিয়ে কথা বলতে ভোলেননি এই নেতা। বলেন, ‘‘ভালো কিছু জিনিস পেতে গেলে নিজের বেলাতেও কিছুটা ত্যাগ করতে হয়।” 

২০২৪ সালে ভারতের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন। ভোটে বিজেপিকে পরাজিত করার পরিকল্পনা সাজাতে বিজেপি বিরোধী নেতারা বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চালাচ্ছেন।

আনন্দবাজার জানায়, কয়েক দিন আগে মমতার সঙ্গে নবান্নে গিয়ে দেখা করেছেন জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার ও উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব।

ওড়িশায় গিয়ে মমতা দেখা করেছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে। যদিও ওই সাক্ষাৎপর্বে রাজনীতি নিয়ে কথা হয়নি বলে জানিয়েছিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী।

তবে কয়েক দিন আগে মমতা বলেছেন, ‘‘সব বিরোধী দল এক হয়ে যান। ওয়ান টু ওয়ান ফাইট হোক। চেষ্টা করব এক সঙ্গে কাজ করার।’’