রাজধানী পোহোফাঁসের অধিকাংশ এলাকা অপরাধী দলগুলো দখল করে রেখেছে।
Published : 14 Oct 2023, 06:36 PM
সহিংস অপরাধী দলগুলোকে দমনে হাইতি আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়ার এক বছর পর ক্যারিবীয় দেশটিতে বিদেশি নিরাপত্তা মিশন পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
হাইতির রাজধানী পোহোফাঁসের অধিকাংশ এলাকা এসব অপরাধী দলগুলো দখল করে রেখেছে।
সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর হাইতির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ ভিক্তর জিনিউস বলেন, “এটা সাধারণ একটি ভোটের চেয়ে বেশি কিছু, এটা আসলে উৎপীড়িত একটি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ। এটা অনেক দিন ধরে দুর্ভোগে থাকা মানুষদের জন্য একটি আশার ঝলক।”
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও একুয়েডোরের যে খসড়া প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, সেখানে ‘মাল্টিন্যাশনাল সিকিউরিটি সাপোর্ট’ মিশনকে ‘যে কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার’ অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা বল প্রয়োগের আইনি অনুমোদন হিসেবে বিবেচিত হবে।
জাতিসংঘ সনদের অধ্যায় ৭ এর অধীনে বল প্রয়োগের একচ্ছত্র অনুমতির বিষয়ে সতর্ক থাকতে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র চীন ও রাশিয়া প্রস্তাবটিতে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। বাকি ১৩ সদস্য প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়।
চীনের দাবি অনুযায়ী নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরও বিস্তৃত করে হাইতির অপরাধী দলগুলোকেও এর আওতায় নিয়ে আসে। হাইতির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অপরাধী দলগুলো যেসব অস্ত্র ব্যবহার করে, সেগুলোর অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা বলে ধারণা। এর এই নিষেধাজ্ঞা শুধু কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ছিল।
ভোটের পর জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জান বলেছেন, “এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত। পরিষদ আরও আগে এ সিদ্ধান্তটি নিলে হাইতির নিরাপত্তা পরিস্থিতি হয়ত আজকের মত এতোটা খারাপ হতো না।”
নিরাপত্তা সহায়তা মিশনে নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুক দেশ খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত হাইতির অনুরোধে সাড়া দেওয়া যাচ্ছিল না। জুলাইতে ১০০০ পুলিশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কেনিয়া এগিয়ে এলে উদ্যোগটি গতি পায়। এরপর বাহামাস ১৫০ জন নিরাপত্তা সদস্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। জ্যামাইকা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা এ ধারায় শামিল হলে হাইতির অনুরোধ সাড়া দেওয়ার প্রেক্ষাপট প্রস্তুত হয়।
সোমবার নিরাপত্তা পরিষদ প্রস্তাবটি অনুমোদন করলেও কত দ্রুত বাহিনী মোতয়েন করা হবে, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত টমাস গ্রিনফিল্ড এক বিবৃতিতে বলেন, “আজকের ভোটাভুটি শুধু প্রথম পদক্ষেপ। এখন মিশন মোতায়েনের কাজ শুরু হল।”
কোনো সেনা না পাঠালেও যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই বহুজাতিক মিশনে ১০ কোটি ডলার দিয়ে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশটি গোয়েন্দা, এয়ারলিফট, যোগাযোগ ও মেডিকেলসহ প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস সমর্থন দেবে।
হাইতির প্রধানমন্ত্রী আহিয়েল অঁরির অনির্বাচিত প্রশাসনকে সমর্থন দিতে দেশগুলো সতর্ক ছিল। কিন্তু অঁরি বলছেন, দেশের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না। জানুয়ারি থেকে কোনো নির্বাচিত সরকার ছাড়াই হাইতি পরিচালিত হচ্ছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদন দিলেও এই নিরাপত্তা সহায়তা মিশন জাতিসংঘের অভিযান না। সংবাদসূত্র: রয়টার্স
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে: