এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টের ‘মাগশট’ প্রকাশ পেলো। যার মধ্য দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত এক কারণে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন ডনাল্ড ট্রাম্প।
Published : 25 Aug 2023, 09:58 AM
ভোটের ফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টার মামলায় অভিযুক্ত ডনাল্ড ট্রাম্প জর্জিয়ার আটলান্টা কারাগারে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
আর এর ফল হিসেবে ইতিহাসে প্রথমবারের মত কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের মাগশট দেখার সুযোগ হল বিশ্বের।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকালে ট্রাম্প আত্মসমর্পণ করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মিনিট বিশেক পর দুই লাখ ডলারের মুচলেকায় জামিন দেওয়া হয় তাকে।
ট্রাম্পকে গ্রেপ্তার করার পর নিয়ম অনুযায়ী কারাগারে তার আঙুলের ছাপ নেওয়ার পাশাপাশি ছবি তোলা হয়। কয়েদির মুখমণ্ডলের ওই ছবিকেই বলা হয় মাগশট।
কারা কর্তৃপক্ষ পরে ট্রাম্পের ওই মাগশট প্রকাশ করে। সেই ছবিতে গম্ভীর মুখের ট্রাম্পকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম দেশটির কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টের মাগশট প্রকাশ পেল। ফুলটন কাউন্টি জেল এর রেকর্ডে ট্রাম্প এখন কয়েদি নম্বর পি০১১৩৫৮০৯।
বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণ করবেন ট্রাম্প
জেলের ওয়েবসাইটে কয়েদি হিসেবে ট্রাম্পের বর্ণনায় বলা হয়, ট্রাম্প একজন শেতাঙ্গ পুরুষ, উচ্চতা ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি, ওজন ৯৭ কেজি, ব্লন্ড চুল এবং নীল চোখ।
বিবিসি জানায়, একটি ফৌজদারি মামলায় গত পাঁচ মাসে এ নিয়ে চতুর্থবার গ্রেপ্তার হলেন ট্রাম্প। তবে পুলিশের খাতায় এই প্রথম তার মাগশট জায়গা পেলো।
জামিনে মুক্ত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ এক পোস্টে ট্রাম্প তার ওয়েবসাইটের ঠিকানা এবং মাগশটটি পোস্ট করে লেখেন, “নির্বাচনে হস্তক্ষেপ। কখনো আত্মসমর্পণ নয়!”
২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের পর এই প্রথম টুইটারে (বর্তমান নাম এক্স) পোস্ট দিলেন তিনি।
ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ প্রণোদিত’ বলে বর্ণনা করে আরো বলেন, আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চ্যালেঞ্জ জানানোর দৌড়ে রিপাবলিকান দল থেকে তিনিই সবার আগে আছেন।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান প্রেসিডেন্টদের মধ্যে প্রথম অভিযুক্ত হওয়া ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বিকালে নিউ জার্সি থেকে প্রাইভেট উড়োজাহাজে করে জর্জিয়া পৌঁছান।
তারপর মোটর শোভাযাত্রা করে তিনি ফুলটন কাউন্টি জেলে যান। সেখানে তিনি সব মিলিয়ে প্রায় ২০ মিনিট অবস্থান করেন। তার বেশ কয়েকজন সমর্থন এদিন কারাগারের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন।
এদিন বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করার অধিকার তার রয়েছে।
বলেন, “আমি মনে করি, ওটা ছিল একটি কারচুপির নির্বাচন, চুরি করা নির্বাচন। এবং সেটিকে চ্যালেঞ্জ করার সব ধরনের অধিকার আমার থাকা উচিত।
“এখানে যা ঘটেছে সেটা ন্যায়বিচারের সঙ্গে প্রতারণা। আমি কোনো অন্যায় করিনি এবং সবাই সেটা জানে।”
নির্বাচনের ফলাফলে হস্তক্ষেপের অভিযোগে গত এপ্রিল মাস থেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা হয়েছে। যে মামলাগুলো ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পের রাজনৈতিক ইমেজের ক্ষতি তো করেইনি, বরং দেশজুড়ে তার জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। অন্তত জনমত জরিপগুলো তেমনটাই বলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে তিনি বাকিদের থেকে অনেকটা এগিয়ে আছেন।