বিশ্ব কোভিড জরুরি অবস্থার ইতি টানবে কিনা, বিবেচনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

ডব্লিউএইচও-র এই ‘জরুরি অবস্থা’ কোভিড মহামারীর ওপর আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মনোযোগ ধরে রাখায় সহায়তা করে আসছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2023, 09:52 AM
Updated : 4 May 2023, 09:52 AM

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি অনুযায়ী কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ‘জরুরি অবস্থা’ এখনও জারি রাখা দরকার কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল।

ডব্লিউএইচও-র এই ‘জরুরি অবস্থা’ কোভিড মহামারীর ওপর আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মনোযোগ ধরে রাখায় সহায়তা করে আসছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি কোভিডের জন্য তাদের সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা জারি করে, তারপর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর হওয়া বৈঠকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের প্যানেল এখন পর্যন্ত সতর্কতার ওই স্তর বহাল রেখেছে।

তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ নিজেদের জারি করা কোভিড সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া শুরু করেছে। 

ডব্লিউএইচও-র মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস আন্তর্জাতিকভাবে দেওয়া জরুরি অবস্থাও এ বছরই তুলে নেওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে আসছেন।

তবে প্যানেলের বৃহস্পতিবারের ওই বৈঠকে কোন সিদ্ধান্ত আসবে সে বিষয়ে এখনও কোনো ঐকমত্য হয়নি বলে ডব্লিউএইচও-র উপদেষ্টা ও সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

ডব্লিউএইচও-র প্যানেলের অন্যতম সদস্য, ডাচ ভাইরাসবিদ মারিয়ন কুপমানস বলেছেন, “জরুরি অবস্থার ইতি টানা হতে পারে, সেই সম্ভাবনাও আছে। তবে এই বিষয়ে কিছু বলা খুব কঠিন, কেননা কোভিড এখনও জনস্বাস্থ্যের জন্য জটিল চ্যালেঞ্জ হয়েই আছে।”

প্যানেলের গোপনীয় ওই আলোচনার আগে এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

আলোচনা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা’ তুলে নিলে তা এ সংক্রান্ত বৈশ্বিক তহবিল বা সহযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ভাইরাসটির অপ্রত্যাশিত আচরণের কারণে এই পর্যায়ে এসে মহামারী শেষ হয়েছে তা বলাও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে, বলেছেন আরেকজন বিশেষজ্ঞ।

“আমরা মহামারীর বাইরে নেই কিন্তু ভিন্ন একটি পর্বে এসে পৌঁছেছি,” বলেছেন একসময় দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পরামর্শ দেওয়া নেতৃস্থানীয় কোভিড বিশেষজ্ঞ সালিম আবদুল করিম।

ডব্লিউএইচও-র প্যানেলে না থাকা এই বিশেষজ্ঞ বলেন, জরুরি অবস্থা যদি উঠে যায়ও, তাও সরকারগুলোর উচিত শনাক্তকরণ পরীক্ষা, টিকাদান ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কর্মসূচিগুলো চালিয়ে যাওয়া।

অন্য অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এইচআইভি বা যক্ষ্মার মতো কোভিডকেও চলমান স্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তাকে সঙ্গী করেই জীবনযাপনের পথে অগ্রসর হওয়ার সময় এসে গেছে।

“সব জরুরি অবস্থারই শেষ হতে হয়। আমি আশা করছি ডব্লিউএইচও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই জরুরি অবস্থা তুলে নেবে, যদি তারা এবার নাও তুলে নেয়, জরুরি অবস্থা জারির দায়িত্বে থাকা কমিটির পরের বৈঠকেই এটা তুলতে হবে তাদের,” বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক লরেন্স গোস্টিন।