Published : 01 May 2025, 01:56 PM
পেহেলগামের বৈসরনে হামলা চালানোর দুইদিন আগেও সন্ত্রাসীরা ওই উপত্যকাটিতে উপস্থিত হয়েছিলেন বলে ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ভারতীয় এক গণমাধ্যম।
হামলার সঙ্গে যোগসাজশ থাকা গোপন সহায়তাকারী বা ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার (ওজিডব্লিউ) সন্দেহে যাদের আটক করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তাদের একজনের কাছ থেকে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে, বলেছে তারা।
ভারতশাসিত কাশ্মীরের বৈসরন উপত্যকায় গত সপ্তাহে বেসামরিক পর্যটকদের ওপর ওই সন্ত্রাসী হামলা অন্তত ২৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
ওই হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীরা ১৫ এপ্রিলই পেহেলগামে পৌঁছায় বলে তদন্ত সম্পর্কে অবহিত একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেছেন।
সন্ত্রাসীরা বৈসরন উপত্যকাসহ অন্তত চারটি স্থান রেকি করে, কিন্তু আরু উপত্যকা, স্থানীয় বিনোদন পার্ক ও বেতাব উপত্যকায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি দেখে সেসব জায়গায় হামলার চিন্তা বাদ দেয়।
তদন্ত কাজের নেতৃত্বে থাকা ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) ২০ জনের মতো গোপন সহায়তাকারী বা ওজিডব্লিউ-কে শনাক্ত করেছে, যারা হামলায় জড়িত ‘বিদেশি সন্ত্রাসীদের’ সাহায্য করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই ওজিডব্লিউদের মধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে, বাকিরা নজরদারিতে রয়েছেন।
এদের মধ্যে অন্তত চার গোপন সহায়তাকারী সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন স্থান রেকি ও লজিস্টিক সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে দাবি একাধিক ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের।
হামলার আগে ওই এলাকায় তিনটি স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ার কথাও জানাচ্ছে তারা। তার মধ্যে দুটি ডিভাইস থেকে পাঠানো সঙ্কেত সফলভাবে শনাক্ত হয়েছে।
পেহেলগামে ওই হামলা নিয়ে এনআইএ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত আড়াই হাজারের বেশি মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে; যাদের মধ্যে ১৮৬ জনকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়েছে।
গত সপ্তাহে ওই হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরজুড়ে সমন্বিত অভিযান চালাচ্ছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো। কুপওয়ারা, হানদোয়ারা, অনন্তনাগ, ত্রাল, পুলওয়ামা, সোপোরে, বারামুল্লা ও বান্দিপোরাসহ বিভিন্ন এলাকায় হুরিয়াত কনফারেন্সের বিভিন্ন অংশের মতো নিষিদ্ধঘোষিত এবং জামাত-ই-ইসলামির মতো নানান সংগঠনের সদস্য ও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল বাসিন্দাদের বাড়িঘরে তল্লাশিও চালানো হচ্ছে।
এসব সংগঠনের সক্রিয়তার স্তর যাই থাকুক না কেন, তারা এমন একটি সহায়ক নেটওয়ার্ক দাঁড় করাতে সহায়তা করেছে যা ‘পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদেরকে’ পেহেলগামে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে, এমনটাই বলছে এনআইএ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।
ওসব সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীরা এসব সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে পেহেলগামে হামলায় সহায়তাকারী ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কারদের যোগাযোগের প্রমাণও পেয়েছেন, বলছে এনডিটিভি।
আরও পড়ুন
‘সন্ত্রাসবাদের অপকর্ম’, পেহেলগামে হামলার নিন্দা এফবিআইপ্রধান ক্যাশ প্যাটেলের
পেহেলগামে হামলার বদলা নিতে সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিলেন মোদী
পেহেলগামে জঙ্গী হামলার ঘটনায় ভারতেরই কারসাজি দেখছেন শাহিদ আফ্রিদি