Published : 01 May 2025, 04:07 PM
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ভলগোগ্রাদ শহর স্তালিনগ্রাদ নামে ফিরে যাবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত শহরটির বাসিন্দাদের ওপর নির্ভর করছে।
এই শহরটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে রক্তাক্ত লড়াইয়ে সোভিয়েত বাহিনী নাৎসি আক্রমণকারীদের পরাজিত করার পর ভলগোগ্রাদকে স্তালিনগ্রাদ বলা শুরু হয়।
আগামী সপ্তাহে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তার মিত্রদের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী পালিত হবে। এর আগে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটি এর যুদ্ধকালীন নামে ফিরে যাবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, বুধবার এক ফোরামে শহরটির সাবেক নাম ফেরানোর বিষয়ে পুতিনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যুদ্ধের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের দিক থেকে এ ধারণটি ‘যৌক্তিক’।
“এই সিদ্ধান্ত বাসিন্দারাই নেবে। আমরা এটি ভাবতে পারি না। বাসিন্দাদের জিজ্ঞেস করতে হবে,” তিনি এমনটি বলেছেন বলে উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে আরআইএ।
তিনি আরও বলেন, “নিশ্চিতভাবেই এতে যুক্তি আছে। যতটা সম্ভব এর মতাদর্শটা সরিয়ে ফেললে নামটি অবশ্যই বিজয়ের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু বেশিরভাগ বাসিন্দা কী ভাবছেন তা নিশ্চিত করতে হবে আমাদের।”
এর আগে ভলগোগ্রাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম এর ঐতিহাসিক স্তালিনগ্রাদ নামে ফিরে যায়। পুতিন মঙ্গলবার এ বিষয়ক একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ইউক্রেইন যুদ্ধে অংশ নেওয়া সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি স্থানীয় কর্মকর্তাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে বিমানবন্দরটির যুদ্ধকালীন নাম ফেরানো হয়। ‘মহান দেশপ্রেমিক যুদ্ধে সোভিয়েত জনগণের বিজয়কে স্থায়ী করার জন্য’ নামটি ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে।
রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নে নাৎসি আাক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইকে ‘মহান দেশপ্রেমিক যুদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত করে। এই বিজয়ের বার্ষিকী পালনের জন্য দেশটির কর্তৃপক্ষ জমকালো অনুষ্ঠান করার প্রস্তুতি নিয়েছে।
১৯৬১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নকে স্তালিনের প্রভাব মুক্ত করার প্রক্রিয়ায় অংশ হিসেবে স্তালিনগ্রাদকে ফের ভলগোগ্রাদ নামকরণ করা হয়।
এই শহরটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধটি হয়েছিল। ১৯৪২ থেকে ৪৩ সালের মধ্যে সোভিয়েত লাল ফৌজ (রেড আর্মি) ১০ লাখেরও বেশি হতাহতের বিনিময়ে আক্রমণকারী জার্মান বাহিনীর কোমর ভেঙে দেয়।
এই যুদ্ধে প্রায় আড়াই কোটি সোভিয়েত নাগরিক নিহত হন আর সোভিয়েত ইউনিয়ন ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়।