তালিকায় জয়েন্ট চিফস অব স্টাফও থাকতে পারেন। এর মধ্য দিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনে বড় ধরনের রদবদল ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন দুই মার্কিন কর্মকর্তা।
Published : 14 Nov 2024, 08:15 PM
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের সদস্যরা সামরিক কর্মকর্তাদের বরখাস্তের তালিকা তৈরি করছে। তালিকায় জয়েন্ট চিফস অব স্টাফও থাকতে পারেন বলে দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনে নজিরবিহীন রদবদল ঘটতে পারে।
ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তর সংশ্লিষ্ট ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তারা জানান, ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর কর্মকর্তাদের বরখাস্তের পরিকল্পনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ট্রাম্পের প্রশাসন গঠনের সঙ্গে সঙ্গে সেই পরিকল্পনা পরিবর্তনও হতে পারে।
কর্মকর্তাদের একজন প্রশ্ন তুলেছেন পেন্টাগনের কর্মকর্তাদেরকে গণহারে বরখাস্ত করার সম্ভাব্যতা নিয়ে । ট্রাম্প নিজে এই পরিকল্পনা সমর্থন করবেন কিনা তাও এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও অতীতে যারা তার সমালোচনা করেছেন, সেইসব প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনিও।
ট্রাম্পের প্রচার শিবির তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় কর্মকর্তা বলছেন, নতুন প্রশাসন সম্ভবত ট্রাম্পের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের সাবেক চেয়ারম্যান মার্ক মিলির সঙ্গে সম্পৃক্ত মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর বেশি নজর দেবে।
গত মাসে প্রকাশিত বব উডওয়ার্ডের 'ওয়ার' বইয়ে মিলিকে উদ্ধৃত করে ট্রাম্পকে 'ফ্যাসিবাদী' বলে অভিহিত করা হয়। এমনকি ট্রাম্পের মিত্ররা সাবেক এই প্রেসিডেন্টের প্রতি আনুগত্যহীনতার জন্য মূলত তাকে টার্গেট করেছে। ফলে “মিলি যেসব কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও নিয়োগ দিয়েছেন তাদের প্রত্যেককে ছাঁটাই করা হবে,” বলেন দ্বিতীয় ওই কর্মকর্তা।
জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের মধ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ পদমর্যাদার কর্মকর্তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেরিন, বিমান বাহিনী, ন্যাশনাল গার্ড এবং স্পেস ফোর্সের প্রধান রয়েছেন।
ফক্স নিউজের ভাষ্যকার পিট হেগসেথকে ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা প্রকাশের একদিন পরই মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ নেতাদের বরখাস্ত করার পরিকল্পনা সামনে এসেছে।
হেগসেথ তার ২০২৪ সালের ‘দ্য ওয়ার অন ওয়ারিওরস: বিহাইন্ড দ্য বিট্রায়াল অব দ্য মেন হু কিপ আস ফ্রি’ শীর্ষক বইয়ে লিখেছেন, “দেশের সুরক্ষায় এবং শত্রুদের পরাজিত করতে আমাদেরকে প্রস্তুত করার জন্য পেন্টাগনের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বে আমূল রদবদল ঘটানো দরকার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের। অনেক মানুষকে বরখাস্ত করা দরকার।”
সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রথমেই বরখাস্ত হতে পারেন এয়ার ফোর্স জেনারেল সিকিউ ব্রাউন। এছাড়াও অবিলম্বে বরখাস্ত হবেন দ্য চিফস অব দ্য জয়েন্ট চিফস। যদিও এসবই এখনও প্রাথমিক পর্যায়ের পরিকল্পনা।
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমান এবং সাবেক বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা অবশ্য এত বড় রদবদলের সম্ভাবনাকে খাটো করে দেখছেন। তারা বলছেন, এর কোনও প্রয়োজন নেই। তাছাড়া, ইউক্রেইন এবং মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের অস্থির এই সময়ে এমন পদক্ষেপ সমস্যাই ডেকে আনবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম কর্মকর্তা বলেন, জ্যেষ্ঠ মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশকে বরখাস্ত করা এবং প্রতিস্থাপন করা আমলাতান্ত্রিকভাবে কঠিন হবে। এই পরিকল্পনা হয়ত ট্রাম্পের মিত্রদের হম্বি-তম্বি হতে পারে।