অকল্যান্ডে বন্যা: গুহায় কিশোর নিখোঁজ, জরুরি অবস্থা জারি

নিখোঁজ কিশোরসহ ১৫ জন স্কুলশিক্ষার্থী ও দুইজন শিক্ষকের একটি দল অ্যাবি গুহায় প্রবেশ করেছিল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2023, 01:39 PM
Updated : 9 May 2023, 01:39 PM

নিউ জিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ভারি বৃষ্টি থেকে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার মধ্যে একটি কিশোর সেখানকার একটি গুহায় প্রবেশের পর নিখোঁজ রয়েছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে নিউ জিল্যান্ডের সর্ববৃহৎ এই নগরীতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

বিবিসি জানায়, নিখোঁজ ওই কিশোরসহ ১৫ জন স্কুলশিক্ষার্থী ও দুইজন শিক্ষকের একটি দল মঙ্গলবার অকল্যান্ডের বিখ্যাত ‘অ্যাবি কেভস’ এ প্রবেশ করেছিল। মাটির নিচে তিনটি গুহা মিলে এই ‘অ্যাবি কেভস’।

প্রচণ্ড বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার কারণে গুহার ভেতর পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে প্রথমে পুরো দলই আটকা পড়ে যায়। কিন্তু ওই কিশোর বাদে বাকিরা কিছুক্ষণের মধ্যেই নিরাপদে গুহা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়।

বৃষ্টি কারণে দেখা দেওয়া আকস্মিক বন্যায় সড়কে প্রচুর গাড়ি আটকা পড়ে আছে, গাছ উপড়ে গেছে এবং রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিঘ্নিত হচ্ছে।

গুহার ভেতর কিশোর নিখোঁজ হওয়ার খবর প্রকাশের পরপরই তাকে উদ্ধারে কাজ শুরু হয়। কিন্তু রাত নেমে আসায় মঙ্গলবারের উদ্ধার কাজ স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার ভোরে আবার উদ্ধার কাজ শুরু হবে।

বিবিসি জানায়, স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে ওই কিশোরের বয়স ১১ বছর বলা হলেও সে যে ক্লাসে পড়ে ওই ক্লাসে পড়া শিক্ষার্থীদের বয়স সাধারণত ১৫-১৬ হয়।

‘অ্যাবি কেভস’ এর গুহাগুলোর ভেতর ছাদ থেকে ঝুলতে থাকা চুনাপাথরের লম্বা লম্বা দণ্ড রয়েছে। গুহার নিচের অংশ ডুবো গর্তে ভরা।

ভেতরের পানির স্তর দ্রুত বেড়ে যাওয়া এবং ছাদ থেকে পাথর পড়ার কারণে ভ্রমণকারীদের জন্য ‘অ্যাবি কেভস’ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও কেন শিক্ষার্থীদের আউটডোর ক্লাসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে বিষয়েও পরিষ্কার কোনো তথ্য নেই। তবে নিখোঁজ কিশোর যে হাইস্কুলের শিক্ষার্থী সেটির অধ্যক্ষ এ বিষয়ে তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে নিউ জিল্যান্ড হেরাল্ড।

নিউ জিল্যান্ডের একই অঞ্চলে গত জানুয়ারিতেও রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছিল। তার পরের মাসে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় গ্যাব্রিয়েল।

বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার অনলাইনে অকল্যান্ডের কিছু ছবি প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, লোকজন অফিস থেকে দ্রুত বের হয়ে বাড়ির পথে ছুটছেন। যে কারণে নগরীর কোথাও কোথাও যানজটও সৃষ্টি হয়েছে।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষেবাও প্রস্তুত আছে বলে জানান অকল্যান্ডের ডেপুটি মেয়র ডেসলি সিম্পসন।

আকস্মিক এ বন্যাকে তিনি ‘ক্রমশ খারাপ হতে থাকা জরুরি পরিস্থিতি’ বলে বর্ণনা করেন।

এ বছর ‍জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত অকল্যান্ড অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণের ৯০ শতাংশই হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ওই সময়ে এক ঘণ্টায় ৩৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন থেকে জনগণকে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ বাতিল করার এবং বন্যায় ডুবে থাকা সড়কে গাড়ি না চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ডে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ে ১১ জন নিহত হয়।