টিকটক ব্যান করে যুক্তরাষ্ট্র নিজের পায়ে কুড়াল মারছে: চীন

বিলটি আইনে পরিণত হলে বাইটড্যান্সকে ছয় মাসের মধ্যে টিকটক বিক্রি করে দিতে হবে। আর এমন না করলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অ্যাপ স্টোর ও ওয়েব হোস্টিং প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে অ্যাপটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2024, 11:25 AM
Updated : 14 March 2024, 11:25 AM

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা এমন বিল পাস করেছেন, যেখানে টিকটকের মালিক বাইটড্যান্স অ্যাপ বিক্রি না করলে যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে টিকটক। এর পরপরই চীন সতর্কবার্তা দিয়েছে, প্রস্তাবিত এ নিষেধাজ্ঞা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘নিজের পায়ে কুড়াল মাড়ার মতো’ ঘটনা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এর উত্থাপিত বিলটি টিকটককে চীনা মালিকানা থেকে বেরিয়ে আসতে এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটির ব্যবহার বন্ধেও বাধ্য করতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।

সম্ভাব্য জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে টিকটক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন আইন প্রণেতারা। তবে টিকটকের মালিক কোম্পানি ক্রমাগতই এ অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, টিকটক ব্যবহারে কোনও ধরনের ঝুঁকি নেই।

বুধবার নতুন এ বিল পাস করার পক্ষে সম্মতি দেন রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের সদস্যরা। বিলটি আইনে পরিণত হবে কি না, সে বিষয়টি বিবেচনা করবে মার্কিন সিনেট। তবে, সিনেটে বিলটি পাস করার মতো যথেষ্ট সমর্থন আছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এদিকে, সিনেটের অনুমোদন পাওয়ার পর বিলটি স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে। এরইমধ্যে বিলে স্বাক্ষর করার বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছেন তিনি।

এদিকে, কংগ্রেসে ভোটাভুটির আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘টিকটককে দমন করার’ অভিযোগ তুলেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ‘টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি’।

“এ ধরনের নিপীড়নমূলক আচরণে কোম্পানিগুলো ন্যায্য প্রতিযোগিতায় জিততে পারে না। এমন আচরণ কোম্পানির স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যকলাপকেও ব্যাহত করে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীর আস্থাও কমে আসে এতে। এমনকি আন্তর্জাতিকভাবে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক শৃঙ্খলাও ক্ষতির মুখে পড়ে।” - বলেছেন ওয়াং।

“শেষ পর্যন্ত এর ফল ভোগ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকেই।”

চীনা মুখপাত্রের এমন বক্তব্য দেশটির সংবাদমাধ্যমেও প্রশংসিত হয়। এমনকি এ নিয়ে চীনের বেশ কিছু সংবাদপত্রে ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুনও প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে টিকটককে নিষিদ্ধ করার মার্কিন প্রচেষ্টা নিয়ে বিদ্রুপ করতে দেখা যায়।

এর মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘কুৎসিত আচরণের’ অভিযোগ তোলার পাশাপাশি ‘জোর করে’ অ্যাপ বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যে তারা ‘জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাত’ অপব্যবহার করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত দৈনিক ট্যাবলয়েড ‘গ্লোবাল টাইমস’।

অন্যদিকে, চীনে অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মতো টিকটকও নিষিদ্ধ। দেশটির ব্যবহারকারীরা টিকটকের মতো দেখতে ‘ডউইন’ নামের একটি অ্যাপ ব্যবহার করেন, যা কেবল চীনেই পাওয়া যায়। আর এই অ্যাপের পর্যবেক্ষণ ও সেন্সরশিপ দেশটির সরকারের নিয়ন্ত্রণে।

বিলটি আইনে পরিণত হলে বাইটড্যান্সকে ছয় মাসের মধ্যে টিকটক বিক্রি করে দিতে হবে। আর এমন না করলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অ্যাপ স্টোর ও ওয়েব হোস্টিং প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে অ্যাপটি।