কানাডায় প্রস্তাবিত নতুন আইনে মেটা মালিকানাধীন ফেইসবুক ও অন্যান্য ইন্টারনেট পরিষেবাকে বিভিন্ন সংবাদভিত্তিক কনটেন্টে আর্থিক লভ্যাংশ দিতে বাধ্য করার বিষয়টিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে ফেইসবুকের করা এক মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, সংবাদের কোনো অর্থনৈতিক মূল্য নেই, ফেইসবুকের এমন মন্তব্য ছিল স্রেফ ভুয়া যুক্তির ভিত্তিতে।
সোমবার ট্রুডো সরকারের আইন নিয়ে দেশটির পার্লামেন্টেরিয়ান কমিটির সঙ্গে কথা বলার সময় মেটার এক কর্মকর্তা বলেন, সংবাদের সামাজিক মূল্য থাকলেও কোম্পানির কাছে এর কোনো অর্থনৈতিক মূল্য নেই।
“সমস্যা হচ্ছে, আমাদের এমন বিষয়ের জন্য প্রকাশকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হচ্ছে, আমাদের বিবেচনায় যার কোনো অর্থনৈতিক মূল্য নেই,” কমিটিকে বলেন মেটার কানাডা অংশের ‘পাবলিক পলিসি’ বিভাগ প্রধান র্যাচেল কারেন।
“বিভিন্ন ইন্টারনেট জায়ান্ট যেসব যুক্তি দেখাচ্ছে, সেগুলো কেবল ‘খোঁড়াই’ নয় বরং সেটি আমাদের গণতন্ত্র ও অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক,” মঙ্গলবার বলেন ট্রুডো।
কানাডার রাজধানী অটোয়ায় ট্রুডো সংবাদকর্মীদের বলেন, সংবাদভিত্তিক কনটেন্টে আর্থিক লভ্যাংশ দেওয়ার বিরুদ্ধে ফেইসবুকের অবস্থান নেওয়া থেকেই বোঝা যায়, “কতটা দায়িত্বহীন ও তাদের মনোভাব কতটা সংকীর্ণ”।
ইউক্রেইনের বুচায় ঘটা হত্যাযজ্ঞ নিয়ে কেউ যখন প্রতিবেদন করেন সেটা নিশ্চয়ই ফেইসবুক পেইজে লাইক কামাইয়ের জন্য নয়।জাস্টিন ট্রুডো, কানাডার প্রধানমন্ত্রী
‘বিল সি-১৮’ বা ‘অনলাইন নিউজ অ্যাক্ট’ নামের এই প্রস্তাবিত আইন ফেইসবুক ও গুগলের মতো কোম্পানিকে বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশকের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করতে ও তাদের আর্থিক কন্টেন্টের জন্য আর্থিক লভ্যাংশ দিতে বাধ্য করবে। ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়াতে একই ধরনের আলোড়ন সৃষ্টিকারী আইন কার্যকর হওয়ার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
প্রস্তাবিত আইনটি সংশোধন ছাড়া পাস করলে দেশটি থেকে বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে প্রবেশের সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে গুগল ও মেটা। তাদের মূল আপত্তির জায়গা হলো, নিজেদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা সংবাদ প্রতিবেদনে লিঙ্কের জন্য আর্থিক লভ্যাংশ দেওয়া তাদের ব্যবসার জন্য টেকসই হবে না।
ফেইসবুক বলছে, ব্যবহারকারীর ফিডে বিভিন্ন নতুন প্রতিবেদন ৩ শতাংশেরও কম জায়গা নিয়ে থাকে। আর সংবাদকর্মীরা চাইলে ব্যক্তিগত পেইজে নিজেদের কাজ পোস্ট করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।
“ইউক্রেইনের বুচায় ঘটা হত্যাযজ্ঞ নিয়ে কেউ যখন প্রতিবেদন করেন সেটা নিশ্চয়ই ফেইসবুক পেইজে লাইক কামাইয়ের জন্য নয়,” বলেন ট্রুডো।