নিজস্ব মূলধন খরচের পরিকল্পনায় তহবিল একশ কোটি ডলার বাড়িয়েছে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা।
সোমবারের নিয়ন্ত্রক ফাইলিংয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ‘সমন’ পাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেছে টেসলা, যা ২০১৮ সালে কোম্পানির সিইও ইলন মাস্কের করা ‘গো-প্রাইভেট’ টুইট সম্পর্কিত।
এই বছর ও পরবর্তী দুই বছরের প্রতিটিতে ছয়শ থেকে আটশ কোটি ডলার খরচের পরিকল্পনা করছে টেসলা, যা আগের পাঁচশ থেকে সাতশ কোটি ডলারের খরচ পরিকল্পনা থেকে বেড়েছে। টেক্সাস ও বার্লিনের নতুন দুই কারখানায় উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
জুন মাসে মাস্ক বলেছেন, চীনের বন্দরজনিত সমস্যা ও ব্যাটারি ঘাটতির কারণে উৎপাদন বাড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় শত শত কোটি ডলার হারাচ্ছে ওইসব কারখানা।
১৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)’র পাঠানো সর্বশেষ সমনে তারা ২০১৮ সালে নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে মাস্কের নিষ্পত্তি সম্পর্কিত তথ্য চেয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
নিজের ‘গো-প্রাইভেট’ টুইট নিয়ে এসইসি’র করা এক মামলার নিষ্পত্তি করেছেন মাস্ক, যেখানে কোম্পানি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য টুইট করার আগে কোম্পানির আইনজীবিদের অনুমতি নেওয়ার শর্তে রাজি হয়েছিলেন তিনি।
টেসলা বলছে, তারা সরকারী কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করবে। এই প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি এসইসি। নভেম্বরে ওই মামলার নিষ্পত্তির বিষয়ে টেসলাকে প্রথমবার সমন পাঠায় নিয়ন্ত্রক।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ও নিজেকে ‘বাক স্বাধীনতার প্রবক্তা’ হিসেবে দাবি করা মাস্ক মার্চে বলেছেন, তার ‘তহবিল সুরক্ষা’ সম্পর্কিত টুইটটি সত্য ছিল, যেখানে র্যাপ তারকা এমিনেমের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে ২০১৮ সালে এসইসি’র সঙ্গে হওয়া চুক্তি বাতিলের বিষয়টি চিহ্নিত করেছেন তিনি।
জুন মাসে চুক্তিটি বাতিল করতে একজন বিচারক অস্বীকৃতি জানানোর বিপরীতে আপিল করেছেন মাস্ক।
চার হাজার চারশ কোটি ডলারে টুইটার কেনার প্রস্তাব থেকে সরে আসা মাস্কের আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার মধ্যেই এলো এই সর্বশেষ সমনটি।
জুন মাসে নিজের একটি টুইট নিয়ে নিয়ন্ত্রকের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মাস্ককে, যেখানে ‘ভুয়া’ ব্যবহারকারী ও স্প্যাম অ্যাকাউন্টের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ থাকার কারণে নিজের টুইটার অধিগ্রহনের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
টেসলার ফাইলিং বলছে, নিজস্ব বিটকয়েনের ৭৫ শতাংশই ‘ফিয়াট’ মুদ্রায় রূপান্তরের কারণে ছয় কোটি ৪০ লাখ ডলার লাভ করেছে তারা। এ ছাড়া, ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানির ‘ইম্পেয়ারমেন্ট চার্জ’ ছিল ১৭ কোটি ডলার।
ফাইলিং অনুযায়ী, ৩০ জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট ডিজিটাল সম্পদের পরিমাণ ২২ কোটি ২০ লাখ ডলার।
ফিয়াট মুদ্রা কী?
সরকার প্রচলিত মুদ্রা যেটির মূল্য স্বর্ণ বা অন্য কোনো মূল্যবান ধাতুর বিনিময় হারের ওপর নির্ভরশীল নয়। যেমন মার্কিন ডলার, ইউরো বা ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং।
ল্যাটিন ভাষা থেকে আসা শব্দ ফিয়াট মানে হচ্ছে আদেশ বা ডিক্রি অনুসারে।