‘শহীদ’ শব্দের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন: মেটাকে ওভারসাইট বোর্ড

‘শহীদ’ শব্দটি রয়েছে এমন পোস্টগুলোতে যদি স্পষ্টভাবে সহিংসতার উল্লেখ থাকে বা পোস্টগুলো যদি মেটার অন্যান্য নিয়ম ভঙ্গ করে কেবল তখনই সেগুলো মুছে ফেলা উচিত।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2024, 09:49 AM
Updated : 27 March 2024, 09:49 AM

আরবি শব্দ ‘শহীদ’-এর ওপর থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ফেইসবুকের মালিক মেটা প্ল্যাটফর্মসকে আহ্বান জানিয়েছে কোম্পানির ওভারসাইট বোর্ড।

এ প্রসঙ্গে এক বছরব্যাপী পর্যালোচনার পর দেখা গেছে মেটার পদ্ধতি ব্যাপক ‘বিস্তৃত’ ছিল ও অযথাই লাখ লাখ ব্যবহারকারীর বক্তব্যকে দমিয়ে রেখেছিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

‘শহীদ’ শব্দটি রয়েছে এমন পোস্টগুলোতে যদি স্পষ্টভাবে সহিংসতার উল্লেখ থাকে বা পোস্টগুলো যদি মেটার অন্যান্য নিয়ম ভঙ্গ করে কেবল তখনই সেগুলো মুছে ফেলা উচিত বলে জানিয়েছে মেটার ওভারসাইট বোর্ড।

মেটার অর্থায়নেই স্বাধীনভাবে এ বোর্ড নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

মধ্যেপ্রাচ্যবিষয়ক কনটেন্ট নিয়ে বছরের পর বছর কোম্পানিটির সমালোচনার পর এ রায় এসেছে বলে উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। ২০২১ সালে মেটার নিজের অর্থায়নে করা এক সমীক্ষায় উঠে আসে, তাদের পরিষেবা ব্যবহার করা ফিলিস্তিনি ও অন্যান্য আরবি ভাষার ব্যবহারকারীদের ওপরে কোম্পানির বিভিন্ন পদ্ধতি মানবাধিকার প্রশ্নে ‘বিরূপ প্রভাব’ ফেলছে।

অক্টোবরে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর থেকেই এ সমালোচনা আরও বেড়েছে। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অভিযান ও পরে গাজায় কয়েক হাজার মানুষকে হত্যার বিষয়ে ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনকারী কনটেন্ট দমন করার জন্য মেটাকে অভিযুক্ত করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।

মেটার ওভারসাইট বোর্ড মঙ্গলবার নিজেদের প্রতিবেদনেও একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। বোর্ডের মতে, ‘শহীদ’ শব্দের বিভিন্ন অর্থ আমলে না নেওয়ার ফলে, সহিংসতার উদ্দেশ্যে তৈরি নয় এমন কনটেন্টও প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

“সেন্সরশিপ নিরাপত্তার উন্নতি করতে পারে ও করবে, মেটা এমন ধারণা নিয়ে কাজ করছে । তবে, কিছু প্রমাণ থেকে বোঝা যায়, উন্নতির বদলে বরং সেন্সরশিপ কিছু জনসংখ্যাকে প্রান্তিক করে তুলছে,” – এক বিবৃতিতে বলেছেন ওভারসাইট বোর্ডের কো-চেয়ার হ্যাল থর্নিং-স্মিড।

বর্তমানে মেটার ‘বিপজ্জনক সংস্থা ও ব্যক্তিদের’ তালিকায় থাকা লোকদের উল্লেখ করে ‘শহীদ’ ব্যবহার করা যেকোনো পোস্ট মুছে ফেলছে কোম্পানিটি। এ তালিকায় ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী, ড্রাগ কার্টেল ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী সংগঠন রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

বোর্ডের প্রতিবেদন অনুসারে, মেটা বলছে শব্দটি সেই সংগঠনগুলোর প্রশংসা করে যাদের কোম্পানিটি নিষিদ্ধ করেছে। আর মেটার বিপজ্জনক সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত বিভিন্ন দলের মধ্যে হামাসও রয়েছে।

২০২০ সালে বিভিন্ন নীতি নতুন করে মূল্যায়ন শুরু করার পর গত বছর মেটা এ বিষয়ে বোর্ডের সাহায্য চেয়েছিল। তবে, অভ্যন্তরীণভাবে তারা একমত হতে ব্যর্থ হয় বলে জানিয়েছে বোর্ড।

অন্য যেকোনো একক শব্দ বা বাক্যাংশের চেয়ে ‘শহীদ’ শব্দটির কারণে প্ল্যাটফর্ম থেকে বেশি কনটেন্ট সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও উঠে এসেছে বোর্ডের প্রতিবেদনে।

কোম্পানিটি বোর্ডের এ আহ্বান পর্যালোচনা করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে এক বিবৃতিতে বলেছেন মেটার মুখপাত্র।