ভুয়া সংবাদ ও গুজব ছাঁটাইয়ের প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন সংবাদ উপস্থাপক ও গণমাধ্যম সংস্থাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা এক লাখের বেশি অ্যাকাউন্ট ইন্টারনেট থেকে সরিয়েছে চীন।
মাসব্যাপী এই কার্যক্রম পরিচালনার কথা জানিয়েছে দেশটির সাইবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘দ্য সাইবারস্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ চায়না (সিএসি)’।
ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য সরাতে সংস্থাটি বিভিন্ন সামাজিক প্ল্যাটফর্মে ‘ভুয়া সংবাদ’ প্রচার করা ও রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের ছদ্মবেশে থাকা অ্যাকাউন্টগুলোতে মনোযোগ দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলেছে, ৬ এপ্রিল থেকে তারা জাল সংবাদ ইউনিট ও সংবাদ উপস্থাপক সংশ্লিষ্ট এক লাখ সাত হাজার অ্যাকাউন্ট ও আট লাখ ৩৫ হাজার ভুয়া সংবাদ নিবন্ধ সরিয়েছে।
চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনলাইনে গুজবের লাগাম টেনে ধরার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্যেই এই ছাঁটাইয়ের খবর এলো। এমনকি কিছু কিছু দেশ অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনতে বিভিন্ন নতুন আইনও জারি করছে।
চীনা সামাজিক মাধ্যমগুলোয় এরইমধ্যে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে সংবাদ প্রচারিত হয়। আর ‘টুইটার সদৃশ’ ওয়েইবো’র মতো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের তৈরি হ্যাশট্যাগগুলো সমর্থন করে। অন্যদিকে, সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচিত বিষয়াদি ও ঘটনার হ্যাশট্যাগ সেন্সর করে বেইজিং, এমনকি সেগুলো ভাইরাল হলেও।
‘সিএসি’ বলেছে, তাদের পর্যালোচনায় বিভিন্ন এমন অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে যেগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের ছদ্মবেশে নিউজ স্টুডিও’র দৃশ্যগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করার পাশাপাশি পেশাদার সংবাদ উপস্থাপকের অনুকরণ করেছে। সেইসঙ্গে জনগণকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে উপস্থাপকও বানিয়েছে।
সোমবার নিজস্ব ওয়েবসাইটে পোস্ট করা বিবৃতিতে সিএসি বলেছে, সামাজিক ও চলমান আন্তর্জাতিক ঘটনার মতো আলোচিত বিষয়গুলো উঠে এসেছে এইসব শনাক্ত করা ভুয়া খবরে।
“বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি তাদের প্রামাণিক ও বাস্তবসম্মত সংবাদ পৌঁছে দিতে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে নির্দেশনা দেবে সিএসি।” --বলেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
সংস্থাটি আরও যোগ করে, বিভিন্ন ভুয়া সংবাদ ও উপস্থাপক সম্পর্কে তথ্য দিতে তারা ব্যবহারকারীদেরকেও উদ্বুদ্ধ করেছে।
ইন্টারনেটের তথ্য ও ভাষা নিয়ন্ত্রণে চীনের সরকার নিয়মিতই বিভিন্ন এমন পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যা তাদের বিবেচনায় অনুপযুক্ত, আপত্তিকর হওয়ার পাশপাশি জনসাধারণ ও ব্যবসার জন্য হুমকি বলে মনে হয়।
সম্প্রতি অনলাইনে বিভিন্ন ব্যবসা ও উদ্যোক্তার খ্যাতির জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত ক্ষতিকারক মন্তব্যে ‘ক্র্যাক ডাউন’ আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সিএসি।
চ্যাটজিপিটি’র মতো দ্রুত বর্ধনশীল এআই প্রযুক্তিতে সতর্কতার নতুন স্তর যুক্ত করেছে। একটি রেল দুর্ঘটনা নিয়ে ভুয়া সংবাদ তৈরির অভিযোগে সম্প্রতি চীনের গানসু প্রদেশ থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।