প্রথমে, ব্যবহারকারী ফোনের বাইরের অংশ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে পারেন। কারণ, তিনি সম্ভবত প্রতিদিন একে নিজের মুখের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন।
Published : 17 Feb 2023, 03:40 PM
ব্যবহারকারীর অ্যান্ড্রয়েড ফোন অনেকটা ব্যক্তিগত গাড়ির মতো। ডিভাইসের বিভিন্ন ত্রুটি শনাক্তে, ভবিষ্যতের সম্ভাব্য কোনো সমস্যা ঠেকাতে ও এর সেরা কার্যকারিতা ধরে রাখতে স্মার্টফোনকেও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়।
প্রথমে, ব্যবহারকারী ফোনের বাইরের অংশ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে পারেন। কারণ, তিনি সম্ভবত প্রতিদিন একে নিজের মুখের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন।
ফোনের চার্জিং পোর্ট ও স্পিকার দ্রুতই ধুলো ময়লা সংগ্রহ করতে পারে। আর এটি কেবল ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যবিধির জন্যই ক্ষতিকর নয়, বরং এটি ফোনের আয়ুও কমিয়ে দিতে পারে।
তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ফোনের ভেতরে। এর মধ্যে আছে ফোনের বিভিন্ন এমন সেটিং পরিবর্তন, যা ব্যবহারকারী হয়তো কখনও ছুঁয়েও দেখেননি।
কেবল কয়েক মিনিট খরচ করে ব্যবহারকারী নিজের অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে এমন কিছুতে পরিণত করতে পারেন, যা দেখতে একেবারে নতুন মনে হয়, অন্তত ফোনটি আপগ্রেড করার আগে যতটা পারা যায়।
ব্যবহারকারীর অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ‘টিপ-টপ আকারে’ রাখতে এর প্রতিস্থাপন, পুনর্গঠন ও কাস্টমাইজের পাঁচটি সহজ টিপস প্রকাশ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট।
‘ভুলে যাওয়া’ অ্যাপ মুছে ফেলা
ব্যবহারকারীর হোম স্ক্রিন বা অ্যাপ সংগ্রহে কিছু সময় অনুসন্ধান চালিয়ে তিনি যে অ্যাপগুলো আর ব্যবহার করেন না, সেগুলো মুছে ফেলতে হবে। এগুলো কেবল ফোনের স্টোরেজে অতিরিক্ত জায়গা খেয়ে ফেলছে বিষয়টি এমন নয়। বরং ব্যবহারকারী এগুলো প্রথম খোলার পর তার অনুমোদিত বিভিন্ন তথ্যেও এর প্রবেশাধিকার থেকে গেছে।
স্টোরেজ খালি করতে পুরোনো ফাইল মুছে ফেলা
পুরানো অ্যাপ মুছে ফেলার পর, ব্যবহারকারীর অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সংরক্ষিত বিভিন্ন পুরোনো ফাইল মুছে আরও স্টোরেজ খালি করতে পারেন। ব্যবহারকারীর অগোছালো উপায়ে ডাউনলোড করা বিভিন্ন ফাইল মুছে ফেলতে ভুলে যাওয়া খুবই সাধারণ বিষয়। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, নতুন কোনো খাবার দোকানের টেইকআউট মেনু বা বন্ধুর পাঠানো ‘জিআইএফ’।
ফোনের স্টোরেজ ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে দ্রুতগতির ও সহজ উপায় হলো এমন কোনো ‘ফাইলস’ অ্যাপ ব্যবহার করা, যা আগেই ফোনে ইনস্টল অবস্থায় ছিল।
ব্যবহারকারী এই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন ‘ডাউনলোড’ নামের ফোল্ডারে অনুসন্ধান চালিয়ে। এতে তিনি যেসব ফাইল আর ব্যবহার করতে চান না, সেগুলো মুছে ফেলতে পারেন বা এগুলোকে গুগল ড্রাইভের মতো কোনো জায়গায় সরিয়ে রাখতে পারেন।
বেশিরভাগ ফাইল অ্যাপই সাধারণত ব্যবহারকারীর ডিভাইসে সংরক্ষিত বড় ফাইলগুলো প্রকাশ করে। উদাহরণ হিসেবে, ‘ওয়ানপ্লাস ১০ প্রো’ ডিভাইসের ম্যানেজার অ্যাপে অনেক জায়গা নিয়ে ফেলছে, এমন বিভিন্ন ফাইলের জন্য অ্যাপে আলাদা একটি বিভাগ রয়েছে।
ফোনে নতুন চেহারা পেতে এর ‘হোম স্ক্রিন সেটিং’ পরিবর্তন
অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের অন্যতম সেরা সুবিধা হলো, ব্যবহারকারী যে কোনো সময় নিজের ফোনের চেহারা পুরোপুরি কাস্টমাইজ করতে পারেন। এর জন্য বিভিন্ন অ্যাপ ‘আইকন প্যাক’ ইনস্টল থেকে শুরু করে, ডিভাইসে যেসব ‘লঞ্চার’ ব্যবহৃত হয় সেগুলো পুরোপুরি প্রতিস্থাপন পর্যন্ত, ব্যবহারকারীর ফোন ‘পারসোনালাইজ’ করার এমন প্রচুর অপশন রয়েছে।
ব্যবহারকারী চাইলেই নিজের ডিভাইসে বিভিন্ন লঞ্চার ও অ্যাপ আইকন ইনস্টল করতে পারেন। তবে, শুরুর দিকে তার ফোনের হোম স্ক্রিন সেটিংয়ে এরইমধ্যে থাকা বিভিন্ন অপশন খুঁজে দেখতে পারেন তিনি।
এর জন্য ব্যবহারকারীর হোম স্ক্রিনের কোনো ফাঁকা জায়গায় কয়েক সেকেন্ড চাপ দিয়ে রাখার পর তাকে ‘হোম সেটিং’ (বা এর অনুরূপ) নামের অপশন বাছাই করতে হবে। এতে তার হোম স্ক্রিনের বিভিন্ন অপশন খুলবে, যেখানে তিনি চাইলেই বিভিন্ন সেটিং কাস্টমাইজ করতে পারবেন।
ডিভাইস সেটিং ‘অপটিমাইজ’
সেটিংয়ের কথা বলতে গেলে, ব্যবহারকারীর ফোনে যেসব সেটিং তাকে বিরক্ত করে আসছে, সেগুলো পর্যবেক্ষণ ও বদলানোর এটিই সঠিক সময়। এমন বেশ কিছু সংখ্যক সেটিং আছে, যা ব্যবহারকারী নিজের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেরা কার্যকারিতা বের করে আনার উদ্দেশ্যে বদলাতে বা কাস্টমাইজ করতে পারেন।
উদাহরণ হিসেবে, অ্যাপে ‘ডার্ক মোড’ চালু করলে এটি কেবল ভালোই দেখায় না, বরং ব্যাটারি লাইফও বাঁচায়।
প্রাইভেসি অপশন ‘কাস্টমাইজ’
ফোনের বিভিন্ন সেটিং পরিবর্তনের পর বিরতি না নিয়ে ব্যবহারকারীকে সর্বশেষ একটি কাজ করতে হবে। তা হলো, ফোনের প্রাইভেসি সেটিং দুবার যাচাই করা।
এর জন্য ব্যবহারকারীকে ডিভাইসের ‘সেটিং’ অ্যাপে গিয়ে এর ‘প্রাইভেসি’ অপশনে চাপ দিয়ে ‘পারমিশন ম্যানেজার’ নামের অপশনটি বাছাই করতে হবে।
ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ডেটার ভাণ্ডারে কোন অ্যাপগুলোর প্রবেশাধিকার রয়েছে, তা দেখতে এর প্রতিটি বিভাগ পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে।
উদাহরণ হিসেবে, এমন অ্যাপ খুঁজে বের করতে হবে, যেখানে ব্যবহারকারী নিজ লোকেশনের প্রবেশাধিকার দিতে চান না। এর পর তিনি এটি বন্ধ করতে পারবেন। এটি ডিভাইসের বিভিন্ন কন্টাক্ট, ক্যালেন্ডার ও ক্যামেরার বেলাতেও প্রযোজ্য।
প্রতিটি বিভাগের মধ্য দিয়ে যেতে বেশি সময় লাগে না। এমনকি সময় নিলেও, ব্যবহারকারীর কাছে এটি ফলপ্রসূ হিসেবেই বিবেচিত হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিনেট।