ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বে বেড়েছে সাইবার হামলা: এনিসা

১২ মাসের মধ্যে সকল সাইবার হামলার ২৪ শতাংশের মূল লক্ষ্য ছিল প্রশাসনিক অবকাঠামো। আর ১৩ শতাংশ হামলার টার্গেট ছিল বিভিন্ন ডিজিটাল সেবাদাতা প্ল্যাটফর্ম।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2022, 07:05 AM
Updated : 4 Nov 2022, 07:05 AM

ইউক্রেইন যুদ্ধের মত ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে বিশ্বে সাইবার হামলার ঘটনা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এজেন্সি ফর সাইবার সিকিউরিটি- এনিসা।

অসাধু হ্যাকারদের পাশাপাশি ‘রাষ্ট্রসমর্থিত’ হ্যাকারদের তৎপরতা বাড়ায় পাল্টে যাচ্ছে পুরো সাইবার নিরাপত্তা দৃশ্যপট।

চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত আগের ১২ মাসের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এনিসা জানিয়েছে, ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের মত ঘটনাগুলোর জেরে সাইবার হামলার পরিধি আর ক্ষতি দুটোই আগের চেয়ে বেড়েছে।

এনিসার গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল সাইবার নিরাপত্তা খাতে রাষ্ট্রসমর্থিত ব্যক্তিদের ভূমিকা এবং বিভিন্ন দেশের সরকার, বাণিজ্যিক কোম্পানি এবং বিদ্যুৎ, পরিবহন, ব্যাংকিং ও ডিজিটাল অবকাঠামোর ওপর ক্রমবর্ধমান সাইবার হুমকি।

বৃহস্পতিবার গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সংস্থাটি বলেছে, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি – বিশেষ করে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন গবেষণা চলাকালীন ‘গেইম-চেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করেছে।

সংস্থাটির গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ‘জিরো-ডে এক্সপ্লয়েট’ এবং এআই নির্ভর ‘ডিপফেইক’-এর মাধ্যমে ভুয়া তথ্যর প্রচার চালিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে হ্যাকাররা।

ডেভেলপার সফটওয়্যারের কোনো দুর্বলতা সমাধানের সুযোগ পাওয়ার আগেই হ্যাকারের তার সুযোগ নিয়ে সাইবার হামলা চালানোর ঘটনা সাইবার নিরাপত্তা জগতে ‘জিরো-ডে এক্সপ্লয়েট’ নামে পরিচিতি।

অন্যদিকে, এআইয়ের সহযোগিতা নিয়ে ‘ডিপফেইক’ ভিডিও কনটেন্ট নির্মাণের দিকে ঝুঁকেছে সাইবার অপরাধী ও অসাধু ব্যক্তিরা। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের চেহারা ও কণ্ঠস্বর নকল করার সুযোগ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির কাজে ব্যবহার করছেন তারা।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে অথবা ভুয়া তথ্য প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে ব্যবহার বেড়েছে ‘ডিপফেইক’ ডিজিটাল কনটেন্টের।

এনিসার নির্বাহী পরিচালক ইয়োহান লেপাসসার এক বিবৃতিতে বলেন, “বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতা অনিবার্যভাবে সাইবার নিরাপত্তা হুমকির দৃশ্যপটে বড় বড় পরিবর্তন আনছে।”

হ্যাকারদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এবং কাজের পরিধির কারণে সাইবার নিরাপত্তা খাতের বাস্তবতা ‘পুরোপুরি পাল্টে যাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এনিসার গবেষণায় উঠে এসেছে, ওই ১২ মাসে সকল সাইবার হামলার ২৪ শতাংশের মূল লক্ষ্য ছিল প্রশাসনিক অবকাঠামো। আর ১৩ শতাংশ হামলার টার্গেট ছিল বিভিন্ন ডিজিটাল সেবাদাতা প্ল্যাটফর্ম।

মে মাসেই গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে আরও কঠোর সাইবার নিরাপত্তা নীতিমালা প্রয়োগে সম্মত হয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এর অধীনে নিজেদের ঝুঁকি নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর।

সাইবার হামলার ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে না জানালে এবং ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে, কোম্পানিগুলোর বৈশ্বিক আয়ের দুই শতাংশ পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে নীতিমালায়।