টিকটক নিষিদ্ধ করা প্রথম মার্কিন অঙ্গরাজ্য মন্টানা

গত মাসেই এ নিয়ে ভোটাভুটি হয় অঙ্গরাজ্যটিতে। এতে ভোট দেওয়া ৫৪ জনের মধ্যে ৪৩ জনই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ভোট দেন।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2023, 08:26 AM
Updated : 18 May 2023, 08:26 AM

প্রথম মার্কিন অঙ্গরাজ্য হিসেবে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ডিভাইস থেকে চীনা মালিকানাধীন সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টিকটক নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে মন্টানা।

গেল বুধবার এই নিষেধাজ্ঞাকে আইনে রূপান্তরের উদ্দেশ্যে বিলে স্বাক্ষর করেন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্রেগ জিয়ানফর্তে। আর এটি কার্যকর হবে ২০২৪ সালের প্রথম দিন থেকে।

ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটি বলছে, এই নিষেধাজ্ঞা ‘মন্টানার জনগণের প্রথম সংশোধনীর অধিকারকে লঙ্ঘন করে’।

চীনা সরকারের কাছে ডেটা সরবরাহের শঙ্কায় গোটা বিশ্বের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্তের মুখে পড়েছে টিকটক।

যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান দল থেকে নির্বাচিত গভর্নর জিয়ানফোর্তে আইন প্রণেতাদের বলেন, ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নজরদারির হাত থেকে মন্টানার নাগরিকদের রক্ষা কল্পে এর চেয়েও বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা আমাদের যৌথ অগ্রাধিকারে’ সহায়ক হবে।

এক বিবৃতিতে টিকটক বলেছে, সামাজিক প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করেন মন্টানার ‘কয়েক লাখ নাগরিক’।

“আমরা মন্টানার নাগরিকদের নিশ্চিত করতে চাই, নিজেদের প্রকাশ করতে, জীবিকা নির্বাহে ও বিভিন্ন কমিউনিটি খোঁজার উদ্দেশ্যে তারা টিকটক ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারেন। এর মধ্যে আমরা মন্টানা ও এর বাইরের ব্যবহারকারীদের অধিকার রক্ষায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।” --যোগ করে টিকটক।

টিকটক হয়ত নতুন এই আইনকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।

গত মাসেই এ নিয়ে ভোটাভুটি হয় অঙ্গরাজ্যটিতে। এতে ভোট দেওয়া ৫৪ জনের মধ্যে ৪৩ জনই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে ভোট দেন।

নতুন আইনের অধীনে অ্যাপ স্টোরে টিকটক রাখা বেআইনি হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে, এরইমধ্যে যারা অ্যাপটি ব্যবহার করছেন, তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন না।

গেল ডিসেম্বরে বিভিন্ন সরকারী ডিভাইসে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করেছিল ১০ লাখের কিছু বেশি জনসংখ্যার এই মার্কিন অঙ্গরাজ্য।

টিকটক বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ১৫ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা বেড়ে গেলেও বিভিন্ন তরুণ ও ২০-এর ঘরে থাকা ব্যবহারকারীর কাছে অ্যাপটির জনপ্রিয়তা এখনও শীর্ষে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে এমন শঙ্কা আছে যে টিকটক দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

টিকটকের মালিক কোম্পানি হলো চীনের বাইটড্যান্স। মার্চে মার্কিন কংগ্রেসের এক কমিটি টিকটকের প্রধান নির্বাহী শউ জি চিউ’র সাক্ষ্য গ্রহণ করে, যেখানে চীনা সরকার ব্যবহারকারীর ডেটায় প্রবেশ করতে বা মার্কিন নাগরিকরা অ্যাপে যা দেখেন, সেগুলো প্রভাবিত করতে পারে কি না, সে সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন কমিটির সদস্যরা।

শউ ক্রমাগত বলে আসছেন, সামাজিক অ্যাপটি কখনওই মার্কিন নাগরিকদের নজরদারির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়নি। তবে, বিভিন্ন সংবাদকর্মীর তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কোম্পানির কর্মীদের মাধ্যমে তাদের টিকটক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।

মার্চের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বলেছে, বাইটড্যান্সের টিকটক বিক্রি করা উচিৎ। এমনটি না ঘটলে দেশটিতে তারা সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে।

মন্টানায় অ্যাপটি ব্যবহারে প্রস্তাবিত জরিমানা কেবল বিভিন্ন কোম্পানির বেলায় প্রযোজ্য, একক ব্যবহারকারীর বেলায় নয়। আইন ভাঙলে বিভিন্ন কোম্পানিকে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে অঙ্গরাজ্যটির বিচার বিভাগ।

এর মানে, মন্টানায় নিজস্ব অ্যাপ স্টোরগুলোয় টিকটক ডাউনলোডের সুবিধা অব্যাহত রাখলে অ্যাপল ও গুগলের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরাও জরিমানার মুখে পড়তে পারে।

এদিকে, চীনের সরকারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হওয়ার বিষয়টি ক্রমাগত অস্বীকার করে আসছে টিকটকের মালিক কোম্পানি বাইটড্যান্স।