মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতিনির্ধারকদের নানামুখী চাপের মধ্যেই জনপ্রিয়তায় নতুন মাইলফলক অর্জনের ঘোষণা দিল ক্ষুদ্র দৈর্ঘ্যের ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ কোটি ব্যবহারকারীর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পর এবার দেশটিতে ১৫ কোটি মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর ঘোষণা দিয়েছে চীনা মালিকানাধীন জনপ্রিয় এই অ্যাপ।
আগামী বৃহস্পতিবার টিকটকের প্রধান নির্বাহী শউ জি চিউ’র মার্কিন ‘হাউজ এনার্জি অ্যান্ড কমার্স কমিটি’র সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার আগেই এই মাইলফলকে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে অ্যাপটি।
গেল শুক্রবার জাতীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জাতীয়ভাবে টিকটক বন্ধের ক্ষমতা প্রদান করা আইনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন দেশটির আরও ছয়জন সিনেটর।
গত সপ্তাহে টিকটক বলেছে, বাইডেন প্রশাসন হুমকি দিয়েছে কোম্পানি যদি অ্যাপের মধ্যে নিজেদের চীনা মালিকদের অংশ বিক্রি না করে, তবে তারা গোটা যুক্তরাষ্ট্রেই নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাপটি ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়ছে, যেখানে মার্কিন কংগ্রেসের বিভিন্ন এমন সদস্য অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন, যারা ভয় পাচ্ছেন যে এর মাধ্যমে মার্কিন ব্যবহারকারীর ডেটা চীনের সরকারের হাতে চলে যেতে পারে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে টিকটক বলেছে, বিশ্বব্যাপী তাদের একশ কোটির বেশি মাসিক ব্যবহারকারী রয়েছে।
টিকটকে নিষেধাজ্ঞা দিতে মার্কিন প্রশাসনকে তুলনামূলক বেশি ক্ষমতা প্রদানের উদ্দেশ্যে নতুন আইন প্রণয়ন করা সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটি’র চেয়ারপার্সন মার্ক ওয়ার্নার এক ‘ক্রিস্টিয়ান সায়েন্স মনিটর’-এর ব্রেকফাস্ট ইভেন্টে বলেন, তিনি মনে করেন না টিকটকে যুক্তরাষ্ট্রের ডেটা সুরক্ষিত আছে।
“দেশটির (চীনা কমিউনিস্ট পার্টির) আইনের অধীনে ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষিত থাকবে, এমন ধারণা আসলে বিশ্বাসযোগ্যও নয়।”
টিকটক বলেছে, তারা নিজেদের কঠোর ডেটা নিরাপত্তা কার্যক্রমের পেছনে দেড়শ কোটি ডলারের বেশি খরচ করেছে। এর পাশাপাশি, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ নাকচ করে কোম্পানি বলছে, “জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করাই যদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তবে মালিকানা পরিবর্তন করে এর সমাধান হবে না।”
নতুন এই সংখ্যার মাধ্যমে কোম্পানির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার ইঙ্গিত মেলে, বিশেষ করে তরুণ মার্কিনীদের মধ্যে। মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গে দেশটির কমার্স সেক্রেটারি জিনা রাইমন্ডো বলেন, টিকটকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার রাজনৈতিক প্রভাবও পড়তে পারে।
“আমার ভেতরের রাজনীতিবিদ ভাবছে, আপনি লিখিতভাবেই ৩৫ বছরের কম বয়সী সকল ভোটারকে চিরতরে হারিয়ে ফেলবেন।”--বলেন তিনি।
অ্যাপটিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিৎ নয়, এই যুক্তির পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এই সপ্তাহে টিকটকের কয়েকজন কনটেন্ট নির্মাতাও ওয়াশিংটনে আসবেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।