কোয়ান্টাম কম্পিউটিং: কপিরাইট আইনের শাঁখের করাত

এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হল, যে কনটেন্টে উন্নত ‘কোয়ান্টাম ওয়াটারমার্ক্স’ থাকবে, তা পুরোনো কনটেন্টের চেয়ে সুরক্ষিত থাকার সম্ভাবনা বেশি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2024, 09:11 AM
Updated : 12 March 2024, 09:11 AM

বর্তমান প্রযুক্তির দুনিয়ায় কোয়ান্টাম কম্পিউটিং একটি যুগান্তকারী প্রযুক্তি, যার সহায়তায় কম্পিউটারের গতি অসম্ভবরকম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জেগেছে। এর পাশাপাশি, নতুন এ প্রযুক্তি কপিরাইট আইনের প্রচলিত ধারণাকেও পুরোপুরি বদলে দেওয়ায় প্রস্তুত বলে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।

এর মানে দাঁড়ায়, কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের ফলে শিল্প, সংগীত, বই ও সংস্কৃতিবিষয়ক কনটেন্ট নির্মাতাদের অধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা দিলেও এতে আইন লঙ্ঘনের ঝুঁকিও রয়েছে।

এ গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটার ল স্কুল’-এর ড. জেমস গ্রিফিন। তার ব্যাখ্যা অনুসারে, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের মাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি একইসঙ্গে লোকজনের কপিরাইট আইন প্রয়োগ করার সুযোগও বাড়িয়ে দেবে।

বিশেষ করে, কম্পিউটারের গতি দিন দিন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনও কাজে কপিরাইট আইন লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা শনাক্ত করাও সহজ হয়ে উঠবে। ফলে, আরও বেশি আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা লাগতে পারে। কারণ এর মাধ্যমে আইনের বিভিন্ন গণ্ডিও নতুন উপায়ে পরীক্ষিত হবে।

এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হল, যে কনটেন্টে উন্নত ‘কোয়ান্টাম ওয়াটারমার্ক’ থাকবে, তা পুরোনো কনটেন্টের চেয়ে সুরক্ষিত থাকার সম্ভাবনা বেশি।

এ জলছাপগুলো এক ধরনের ‘কপিরাইট ব্যবস্থাপনা টুল’ হিসেবে কাজ করবে, যা এ ধরনের সুবিধা পাবে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের উচ্চগতির সহায়তায়।

তাই কম্পিউটারের গতি যত বাড়বে, একদিকে কপিরাইট করা কনটেন্ট নকল করে ছড়িয়ে দেওয়ার পথও ততটা সহজ হবে। আবার, এতে কপিরাইট করা কনটেন্টের সুরক্ষা ও ব্যবস্থাপনাও আগের চেয়ে সহজ হবে।

গ্রিফিন বলেছেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের কারণে আরও জটিল ও স্বয়ংক্রিয় উপায়ে কপিরাইট আইন প্রয়োগ করা যেতে পারে।

উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, কপিরাইট লঙ্ঘন শনাক্ত ও ব্লক করার ক্ষেত্রে উন্নত ‘ওয়াটামার্কিং’ ও ‘ফিল্টারিং মেকানিজম’সহ নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে।

এর কারণ, কোয়ান্টাম কম্পিউটার কোনো ডেটা বা তথ্য আরও বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করতে পারে, যা অনুমতি ছাড়া কপিরাইট কনটেন্ট ব্যবহারের বিষয়টি মানুষের পক্ষে কঠিন করে তোলে।

এমনকি নির্মাতারাও এমন কনটন্ট তৈরি শুরু করতে পারেন, যেগুলো তুলনামূলক নিরাপদ এবং অবৈধভাবে কপি বা শেয়ার করা জটিল।

এ ছাড়াও, কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ে খরচ বেশি হওয়ায় বিভিন্ন কনটেন্ট সরাসরি কপিরাইট করার চেয়ে সেগুলো স্ট্রিমিং করার প্রবণতাও বাড়তে পারে।

এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে কোনও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তৈরি করা কনটেন্টও নিরাপদ থাকবে, যেখানে অনুমতিহীন ব্যবহার কেবল ভুল নয় বরং প্রাইভেসির গুরুতর লঙ্ঘন বা চুরির মতো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।