ব্যবহারকারীর ডেটায় বিজ্ঞাপনদাতাদের অবাধ প্রবেশাধিকার দিয়েছে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবহারকারীদের তথ্য চীনা সার্ভারে সংরক্ষণ করছে ডিপসিক।
Published : 10 Feb 2025, 07:33 PM
চীনা এআই অ্যাপ ডিপসিক ‘ব্যাপক হারে’ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে বলে অভিযোগ তুলেছে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা।
ডিপসিকের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি নিজেদের এআই মডেলকে প্রশিক্ষণের জন্য সব ধরনের ইনপুট ডেটা ব্যবহারের অভিযোগ করেছে দেশটির ‘ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস’ বা এনআইএস।
বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার বিষয়েও অ্যাপটির প্রতিক্রিয়া নিয়ে সংস্থাটি প্রশ্ন তুলেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
এনআইএস বলেছে, গত সপ্তাহে বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে এ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যাপ ব্যবহারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আনুষ্ঠানিক একটি নোটিশ পাঠিয়েছে তারা।
রোববার এক বিবৃতিতে এনআইএস বলেছে, “অন্যান্য জেনারেটিভ এআই পরিষেবার বিপরীতে ডিপসিকের বিভিন্ন চ্যাটিং রেকর্ড অন্য কোথাও পাঠানো সম্ভব। কারণ এতে কিবোর্ড ইনপুট প্যাটার্ন সংগ্রহের জন্য একটি ফাংশন রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করতে ও ‘ভলসঅ্যাপলগডটকম’-এর (volceapplog.com) মতো চীনা কোম্পানির সার্ভারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারে।”
এর আগে, সরকারি ডিভাইসে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে অ্যাপটির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। অস্ট্রেলিয়া ও তাইওয়ানের মতো অ্যাপটির ওপর বিধিনিষেধও আরোপ করেছে দেশটি।
এনআইএস বলেছে, ব্যবহারকারীর ডেটায় বিজ্ঞাপনদাতাদের অবাধ প্রবেশাধিকার দিয়েছে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবহারকারীদের তথ্য চীনা সার্ভারে সংরক্ষণ করছে ডিপসিক। চীনের আইন অনুসারে চীনা সরকার চাইলে এসব তথ্যে সহজেই প্রবেশ করতে পারে।
সংস্থাটি আরও বলেছে, বিভিন্ন ভাষায় সংবেদনশীল প্রশ্নের বিভিন্ন উত্তর দিচ্ছে ডিপসিক।
যেমন– ‘কিমচি’ দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রধান খাবার। তবে কিমচি’র উৎস সম্পর্কে কোরিয়ান ভাষায় ডিপসিকের কাছে প্রশ্ন করা হলে অ্যাপটি উত্তর দিয়েছে, কিমচি একটি কোরিয়ান খাবার।
চীনা ভাষায় একই প্রশ্ন করা হলে ডিপসিক জানায়, খাবারটির উৎপত্তি চীনে। অ্যাপটির এমন এলোমেলো উত্তর দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রয়টার্স।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিমচির উৎপত্তির বিষয়টি দক্ষিণ কোরিয়ান ও চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করেছে।
ডিপসিকের বিরুদ্ধে ১৯৮৯ সালে চীনে ‘তিয়েনআনমেন স্কয়ারে বিক্ষোভের’ মতো রাজনৈতিক প্রশ্নের উত্তর সেন্সর করার অভিযোগও এনেছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ডিপসিক অনুরোধ করে বলেছে, “আসুন অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলি।”
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের ইমেইলের অনুরোধে সাড়া দেয়নি ডিপসিক।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন সরকারি বিভাগে ডিপসিক নিষিদ্ধের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ৬ ফেব্রুয়ারি এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বেইজিং কখনই কোনও কোম্পানি বা ব্যক্তিকে আইন লঙ্ঘন করে তথ্য সংগ্রহ বা সংরক্ষণ করতে বলে না।