সেরা যে ‘আরপিজি’ ঘরানার গেইমে শক্তিশালী পিসি লাগবে না

বর্তমান গেইমারদের কাছে ‘রোল প্লেইং গেইম (আরপিজি)’ ঘরানার গেইমের চাহিদা আকাশচুম্বী। গত দশকে যেসব আরপিজি সাফল্য দেখিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ডার্ক সোলস’, ‘ব্লাডবোর্ন’, ‘স্কাইরিম’ সহ অনেক গেইম।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2022, 11:02 AM
Updated : 30 April 2022, 11:02 AM

আরপিজির তালিকায় সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি সাড়া জাগানো গেইমটি হচ্ছে ‘এল্ডেন রিং’। গেইম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ফ্রমসফটওয়্যার’-এর তৈরি গেইমটি অনেক গেইমারেরই পছন্দ তালিকার শীর্ষে রয়েছে।

ছবি: এল্ডেন রিং

ছবি: এল্ডেন রিং

এল্ডেন রিং একটি যুগান্তকারী গেইম বলে সিনেট উল্লেখ করেছে তাদের প্রতিবেদনে। গেইমটির মাধ্যমে ‘সোলস’ গেইমের বিশেষত্ব দর্শকদের দেখিয়েছে ‘আত্মা কেন্দ্রীক অ্যাকশন ফ্যান্টাসি’ ঘরানার এই গেইম।

তবে, এটি চালানোর জন্য অপারেটিং সিস্টেমে রিসোর্স (মানে র‌্যাম, প্রসেসরের) চাহিদা বেশি হওয়ায় অনেক গেইমারই জনপ্রিয় এই গেইমটি খেলতে পারছেন না। তাই, এল্ডেন রিং গেইমটির সঙ্গে মিল রয়েছে, এমন গেইম খেলতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন গেইমাররা।

সেই বিষয়টি মাথায় রেখে, এল্ডেন রিং-এর সঙ্গে মিল রয়েছে এবং যেসব গেইম খেলতে ‘মাঝারি মানের পিসি’ থাকলেই চলবে, গত দশকে প্রকাশিত এমন পাঁচটি ‘অ্যাকশন ফ্যান্টাসি’ ঘরানার গেইম হচ্ছে–

ডার্ক সোলস- রিমাস্টার্ড

২০১১ সালে প্রথম প্রকাশিত ডার্ক সোলস গেইমটির সর্বশেষ ‘রিমাস্টার্ড’ সংস্করণটি প্রকাশ পেয়েছে ২০১৮ সালে।

ছবি: ডার্ক সোলস রিমাস্টার্ড

ছবি: ডার্ক সোলস রিমাস্টার্ড

প্রথম প্রকাশিত ডার্ক সোলস গেইমটি ‘সোলস গেইম’ ঘরানার প্রথম দিকের গেইমগুলোর একটি। এই গেইমটিও বাজারে এনেছিল ফ্রমসফটওয়্যার। আগামী কয়েক বছরের ‘চ্যালেঞ্জিং অ্যাকশন রোল প্লেইং গেইম (আরপিজি)’ গেইমপ্লের মান নির্ধারনের ক্ষেত্রেও পথিকৃৎ হয়ে থাকবে গেইমটি।

‘ট্রিলজি’র প্রথম গেইম হিসেবে, ডার্ক সোলস-এর গল্প শুরু হয়েছে ‘ফার্স্ট ফ্লেইম’ এবং ‘লোডরান’ রাজ্যকে নিয়ে। গেইমটিতে শক্তিশালী ‘বস’-দের হত্যা করতে হতো এবং মাঝে মধ্যে কিছু ‘উদ্ভট’ চরিত্রের সঙ্গেও দেখা হতো।

এখন পর্যন্ত তৈরি অ্যাকশন ঘরানার আরপিজিগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা গেইমটির রিমাস্টার্ড সংস্করণ। পাশাপাশি, আগের গেইমের অভিজ্ঞতা এমনকি পুনরায় অভিজ্ঞতাও নেওয়া যাবে নতুন সংস্করণটিতে।

গেইমটি খেলতে পিসি'তে চার জিবি র‍্যাম, ‘কোর আই ৫’ প্রসেসর সহ উইন্ডোজ ৭, ৮ বা ১০-এর ৬৪ বিট অপারেটিং সিস্টেম থাকা লাগবে।

ব্লাডবোর্ন

২০১৫ সালে প্রকাশিত ফ্রমসফটওয়্যার-এর সবচেয়ে অদ্ভুত গেইমগুলোর একটি হচ্ছে ব্লাডবোর্ন।

ছবি: ব্লাডবোর্ন

ছবি: ব্লাডবোর্ন

গেইমটি খেলার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত ‘চিত্তাকর্ষক’ ও ‘সন্দেহজনক’। কারণ, পরিচিত ‘অ্যাকশন-আরপিজি ফর্মুলা’র সঙ্গে ‘সারভাইভাল হরর’ ঘরানার মিশ্রন ঘটিয়েছে গেইমটি।

গেইমটির ‘কসমিক’ ও ‘গথিক হরর’ ধাঁচের গল্প, অদ্ভুত এক ভ্রমণে নিয়ে যাবে গেইমারকে। সেখানে একাকী ‘শিকারী’ হিসেবে কয়েকটি ভয়ংকর দানবের সঙ্গে যুদ্ধ করবে গেইমার। এ অভিজ্ঞতা সহজে ভোলা সম্ভব নয়।

পিসি'তে চার জিবি র‍্যাম, ‘কোর আই ৩’ প্রসেসর এবং উইন্ডোজ ৭-এর ৬৪ বিট অপারেটিং সিস্টেম থাকলেই গেইমটি চলবে।

দ্য এল্ডার স্ক্রলস ৫: স্কাইরিম

২০১১ সালে প্রকাশিত গেইম নির্মাতা ‘বেথেসডা’র বিখ্যাত ‘ওপেন-ওয়ার্ল্ড আরপিজি’ ঘরানার গেইম ‘স্কাইরিম’ সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই।

ছবি: স্কাইরিম

ছবি: স্কাইরিম

গেইমটিতে ‘অনুসন্ধান’ করার মতো বিশাল সমারোহ রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন পদ্ধতিতে অনুসন্ধান করা যায়। এ ছাড়া, খেলোয়াড়দের জন্য গেইমটিতে একটি ‘অবিশ্বাস্য গভীর বায়ুমণ্ডল’ও তৈরি করেছে নির্মাতারা।

ওপেন-ওয়ার্ল্ড আরপিজি গেইমের কথা মাথায় এলে, প্রথম গেইম হিসেবে অনেকের কাছেই ‘দ্য এল্ডেন স্ক্রলস ৫: স্কাইরিম’-এর নাম চলে আসে। এর পেছনে যথেষ্ট কারণও আছে।

এল্ডেন রিং-এর জগত পছন্দ করা গেইমাররা যদি একই চিন্তাধারার ‘স্বাধীনতা’ এবং ‘ঘুরে বেড়ানোর আকাঙ্ক্ষা’ উপস্থিত, এমন গেইম খুঁজে থাকেন, তারা নিশ্চিতভাবেই স্কাইরিম গেইমটি খেলতে পারেন।

দ্য উইচার ৩: ওয়াইল্ড হান্ট

২০১১ সালে প্রকাশিত ‘সিডি প্রোজেক্ট রেড’-এর গেইম ‘দ্য উইচার ৩’ গত দশকের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাকশন আরপিজি গেইমগুলোর একটি। এর পেছনেও যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

ছবি: দ্য উইচার ৩: ওয়াইল্ড হান্ট

ছবি: দ্য উইচার ৩: ওয়াইল্ড হান্ট

এল্ডেন রিংয়ের মতো, ‘উইচার ৩’ গেইমটিও ‘বিশাল জগতে খোঁজার’ বিষয়টি চিন্তা করে তৈরি হয়েছে। গেইমটি অনেক দানবে ভরা ও এতে বিভিন্ন ‘গোপন জায়গা’ উন্মোচন করতে হয়।

এ ছাড়া, ‘যুদ্ধ ধাঁচের’ এই গেইমের মারামারির ধরনও অনেকাংশে মেলে এল্ডেন রিং-এর সঙ্গে। পাশাপাশি, প্রথম দেখায় ভয়ঙ্কর হিসেবে বিবেচিত ‘শত্রুদের’ হারাতে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহারের বিপরীতে পুরস্কার দেওয়া হয় গেইমারকে।

গেইমটির মূল চরিত্র ‘জেরাল্ট’-এর কারণে গেইমটি আকৃষ্ট করে দর্শকদের। গেইমটির বিশাল জগতকে অন্বেষণ করে দানব হত্যা করে, কয়েন সংগ্রহ করে এবং খিটখিটে স্বভাবের হওয়ায়, শুধু করণীয় কাজ শেষ করতে চায়।

এমন খিটখিটে স্বভাবের মূল চরিত্র নিয়ে বিশাল এই জগত অন্বেষণ গেইমটিকে আরও তৃপ্তিদায়ক করে তোলে। এ ছাড়া, চরিত্রটির শক্তি বাড়িয়ে কঠিন ‘বস’দের হারাতে কিছু সত্যিকারের অবিস্মরনীয় মূহুর্ত সৃষ্টি হয় ‘আঁকাবাঁকা’ এই গল্পটিতে।

গেইমটির পরবর্তী সংস্করণ শীঘ্রই আসছে। ফলে, এখনও গেইমটি না খেলা গেইমারদের জন্য, জেরাল্ট-এর যাত্রা সম্পর্কে জানার আরও সুযোগ রয়েছে।

গেইমটি চালাতে ছয় জিবি র‍্যাম, ‘কোর আই ৫’ প্রসেসর এবং উইন্ডোজ ৭-এর ৬৪ বিট বা উইন্ডোজ ৮-এর ‘ডিরেক্ট এক্স ১১’ অপারেটিং সিস্টেম থাকতে হবে।

ড্রাগন’স ডগমা: ডার্ক অ্যারাইজেন

২০১৩ সালে প্রকাশিত ড্রাগন’স ডগমার এই সংস্করণটি অন্যান্য আরপিজি গেইমের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও গেইমটির ২০১২ সালের সংস্করণ একটি ‘কাল্ট আরপিজি হিট’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

ছবি: ড্রাগন’স ডগমা: ডার্ক অ্যারাইজেন

ছবি: ড্রাগন’স ডগমা: ডার্ক অ্যারাইজেন

পরিচিত ফ্যান্টাসি আরপিজি গেইমে যেসব বৈশিষ্ট্য থাকে, তার বেশিরভাগই রয়েছে গেইমটিতে। এখানে গেইমের চরিত্রকে কাস্টমাইজ করা যাবে। এ ছাড়া, এতে দানবে ভরপুর একটি বিশাল জগত এবং সাহসী কিছু অনুসন্ধান থাকবে।

ড্রাগন’স ডগমা বিশেষত্ব হচ্ছে গেইমারের ভ্রমণের সময় এটি বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থাকা সঙ্গীদের সঙ্গে কাজ করে। ফলে, গেইমার ও তার দলকে ‘ফ্লাইং কিমেরা বিস্ট’ এবং ‘ট্রল’-এর মতো বড় আকারের ‘বস’দের হারাতে তীব্র যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হয়।

সহজ ভাষায় বললে, ড্রাগনস ডগমা এমন একটি অসাধারণ রোল প্লেয়িং গেইম, যার পুরো গেইম জুড়েই রয়েছে রোমাঞ্চকর ‘অ্যাকশন’।

পিসি'তে চার জিবি র‍্যাম, ‘কোর আই ৫’ প্রসেসর এবং উইন্ডোজ ভিসটা বা নতুন যে কোনো অপারেটিং সিস্টেম থাকলেই গেইমটি চলবে।

পরিশেষে বলা যায়, উপরে উল্লিখিত ‘আরপিজি’ ঘরানার গেইমগুলো মাঝারি মানের পিসি’তে গেইমগুলো সহজেই উপভোগ করতে পারেন গেইমাররা। এ ছাড়া, পিসি’র পাশাপাশি গেইমগুলো প্লেস্টেশনেও রয়েছে।