সন্তানের আত্মহত্যা, মেটা ও স্ন্যাপের বিরুদ্ধে আদালতে মা

ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান ‘মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড’ ও ‘স্ন্যাপ ইনকর্পোরেটেড’-এর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন যুক্তরাষ্টের কানেটিকাটের এক মা। দুই প্রতিষ্ঠানের সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি আসক্তিই সন্তানের আত্মহত্যার মূল কারণ বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2022, 11:03 AM
Updated : 22 Jan 2022, 11:03 AM

১১ বছর বয়সের সেলেনা রডরিগেজ নিজের জীবনাবসান ঘটান করেছেন ২০২১ সালে। আদালতের সাম্প্রতিক মামলায় তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে সামাজিক মাধ্যমগুলোর ‘বিপজ্জনক ফিচার’-এর কথা।

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর সামাজিক মাধ্যমগুলোর বিরূপ প্রভাব নিয়ে চলতি বিতর্কের মধ্যেই এলো এই মামলার খবর। ২০২১ সালের শেষভাগে এসে, শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ইনস্টাগ্রাম ও ফেইসবুকের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে অবহিত থেকেও মুনাফার লোভে তা অগ্রাহ্য করে যাওয়ার অভিযোগে সমালোচিত ও বিতর্কিত হয়েছে মেটা। তদন্তে নেমেছেন বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের আইন প্রণেতা ও বাজার পর্যবেক্ষক সংস্থা।

সেলেনা রডরিগেজের মা’র পক্ষে ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে মামলা দায়ের করেছে ‘সোশাল মিডিয়া ভিকটিমস ল সেন্টার (এসএমভিএলসি) নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির বিবৃতি বলছে, “চরমভাবে” ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটে আসক্ত ছিলেন সেলেনা। 

একাধিকবার সন্তানের ডিভাইস জব্দ করেছিলেন মা। কিন্তু, সামজিক মাধ্যম ব্যবহারের জন্য সেলেনা পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে বিবৃতিতে সংগঠনটি।

“আসক্তির কারণে সেলেনা একাধিকবার মানসিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তার মধ্যে একজন থেরাপিস্টের মতে সেলেনার মতো সোশাল মিডিয়া আসক্ত রোগী তিনি আগে কখনো দেখেননি।”-- বিবৃতিতে বলেছে সংগঠনটি।

২০২১ সালের ২১ জুলাই জীবনাবসান ঘটানোর আগের কয়েক মাস হতাশায় ভুগেছেন সেলেনা, রাতে ঘুম হতো না ওই শিশুর। কোভিড-১৯ মহামারীর শুরু হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমের প্রতি আরো বেশি আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি।

এ ছাড়াও সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে সেলেনা একাধিকবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে মামলায়। সহপাঠিরাই পরবর্তীতে ফাঁস করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেয় সেলেনার স্পর্শকাতর ছবি। এতে আরো বিরূপ প্রভাব পড়ে ওই শিশুর মনে, শেষ পর্যন্ত আত্মহনন করেন সেলেনা।

শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে দায়েরকৃত মামলায় মেটা ও স্ন্যাপের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বলছে, উভয় প্রতিষ্ঠান “জেনেশুনে ও ইচ্ছাকৃতভাবে” এমন পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করেছে যা “উল্লেখযোগ্য” সংখ্যক অপ্রাপ্তবয়স্কের জন্য ক্ষতিকর।

বিবিসি’কে দেওয়া এক বিবৃতিতে সেলেনার মৃত্যুতে দুঃপ্রকাশ করলেও মামলা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি স্ন্যাপের এক মুখপাত্র। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান ফেইসবুক।