২০২১: চিপ সঙ্কটের বছরে সেরা গেইমগুলো; পর্ব ২

২০২০ সালকে যদি আখ্যা দেওয়া হয় মহামারী আর লকডাউনের বছর হিসেবে, প্রযুক্তি শিল্পের দৃষ্টিকোণ থেকে ২০২১ সালকে তাহলে সম্ভবত বলতে হবে চিপ সঙ্কটের বছর। সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা হোঁচট খাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হার্ডওয়্যার নির্মাতারা। কিন্তু ওই একই সময়ে ঊর্ধমুখী গতি ধরে রেখেছে গেইমিং শিল্প।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2021, 11:15 AM
Updated : 19 Dec 2021, 11:15 AM

২০২০-এর লকডাউনে বিনোদনের চাহিদা মেটাতে ভিডিও গেইমমুখী হয়েছেন ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশ। চলতি বছরে এসে পাল্টায়নি সে পরিস্থিতি, নানা জটিলতায় বহুল প্রতিক্ষিত কিছু গেইমের মুক্তির দিনক্ষণ পিছিয়ে ২০২২ সালে গেলেও, সব মিলিয়ে গেইমারদের জন্য খারাপ যায়নি ২০২১; ভক্তদের মাতিয়ে রেখেছে পাজল থেকে শুরু করে অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চাসহ বিভিন্ন ঘরানার নতুন গেইম।

বছরের সেরা গেইমগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট।

সাইকোনট ২

মানুষের চিন্তাশক্তির চেয়ে অদ্ভুত আর জটিল কোনো কিছু আছে কি না সেই বিতর্কের ইতি টানা হয়তো বেশ কঠিন কাজ হবে। তবে, সাইকোনট ২ খেলতে গিয়ে হয়তো এই প্রশ্নটিই ভাবাবে গেইমারদের। সিরিজের প্রথম গেইম সাইকোনট ১-এর মূল চরিত্র র‌্যাজ আছে দ্বিতীয় কিস্তিতেও। গেইমের ভেতর মানুষের মনের গহীনে অনুপ্রবেশ করে পৃথিবীর প্রতি তার বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির অন্তর্নিহিত চিন্তা কাঠামোর মুখোমুখি হতে পারে র‌্যাজ।

‘ইন্টারন্যাশনাল স্পাই রিং অফ সাইকিকস’-এর কণিষ্ঠ সদস্য হিসেবে র‌্যাজের মূল দায়িত্ব হলো লুকিয়ে থাকা বিশ্বাসঘাতককে খুঁজে বের করে স্পাই রিং-এর পুরনো শত্রু মালিগুলার মোকাবেলা করা।

ছবি: সাইকোনট ২

এক্সবক্স প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় টাইটেগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয় সাইকোনট ১-কে।  ভক্তদের কেউ কেউ গেইমটিকে আখ্যা দেন ‘মাস্টারপিস’ হিসেবেও। ডায়লগ আর গেইমপ্লে-র মিশেলে গেইমিটর প্রতিটি স্তরই নতুন কিছুর অভিজ্ঞতা দেবে বলে মন্তব্য করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

প্ল্যাটফর্ম:  প্লেস্টেশন ৪, এক্সবক্স সিরিজ এক্স এবং সিরিজ এস, এক্সবক্স ওয়ান, পিসি।

র‌্যাচেট অ্যান্ড ক্ল্যাঙ্ক: রিফট অ্যাপার্ট

‘র‌্যাচেট অ্যান্ড ক্ল্যাঙ্ক: রিফট অ্যাপার্ট’-এর গল্প থেকে শুরু করে চরিত্রগুলোর নড়াচড়া এবং সার্বিক গেইমপ্লের সবকিছুই গেইমারদের ভালো লাগবে বলে মন্তব্য করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। গেইমের মূল গল্প গড়ে উঠেছে ‘ফেলিনয়েড এলিয়েন’ র‌্যাচেট এবং তার রোবটিক সঙ্গী ক্ল্যাঙ্ককে নিয়ে।

ছবি: র‌্যাচট অ্যান্ড ক্ল্যাঙ্ক : রিফট অ্যাপার্ট

বলা হচ্ছে- গেইমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হাসি-ঠাট্টায় মেতে থাকবেন শিশু বা প্রাপ্তবংস্ক গেইমার উভয়েই। প্লেস্টেশন ৫ প্ল্যাটফর্মের সেরা ফিচারগুলো ব্যবহার করে গেইমটি। তাই ‘লোডিং ল্যাটেন্সি’র মতো জটিলতার মুখে পড়তে হবে না গেইমারকে।

প্ল্যাটফর্ম: প্লেস্টেশন ৫

সেবল

এমন একটা মরুভূমির গ্রহের কথা ভাবুন যার সৌন্দর্য আপনার মনকে প্রশমিত করবে– অন্তত এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ‘সেবল’।  গেইমটি খেলতে হবে এমন একটি নারী চরিত্র নিয়ে যে নিজেকে আবিষ্কারে লক্ষ্যে যাযাবর জাতি ছেড়ে নিজ গ্রহ ‘মিডেন’ ঘুরে দেখতে বেরিয়ে পড়ে।

ছবি: সেবল

‘পাজল-এক্সপ্লোরেশন’ ফর্মুলার গেইমটি জেলডা ভক্তদের কাছে পরিচিত মনে হবে বলে মন্তব্য করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট। সেবলের সবচেয়ে ইতিবাচক দিকটি হচ্ছে, ভ্রমণের আনন্দময় দিকটি গেইমারকে মনে করিয়ে দেবে ফ্রেঞ্চ শিল্পী মোবিয়াসের ‘ফাইন আর্ট স্টাইল’ থেকে অনুপ্রাণিত নকশার গেইমটি। 

প্ল্যাটফর্ম: প্লেস্টেশন ৪, এক্সবক্স সিরিজ এক্স এবং সিরিজ এস, এক্সবক্স ওয়ান, পিসি।

ভ্যালহেইম

ভ্যালহেইম খেলতে বসলে প্রথমবারের মতো মুখোমুখী হওয়া ‘ট্রল’-কে নাকি কখনোই ভুলতে পারেন না গেইমররা। গাছের ফাঁক দিয়ে নীল অবয়ব দেখে কৌতুহলী গেইমারের অনুভূতি আতঙ্কে পরিণত হতে বেশি সময় নেয় না। শত্রুর সঙ্গে লড়াই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে খুব সহজেই। আর লড়াইয়ে হেরে গেলে গেইমারকে নিজের পুরনো লুটের খোঁজে লুকিয়ে ফিরে যেতে হবে সেই আগের স্থানে। তবে লড়াই বাদেও নিজের ঘর বানিয়ে, বা গৃহপালিত পশুর দেখভাল থেকেও গেইমার বেশ পরিপূর্ণতার অনুভূতি পাবেন।

ছবি: ভ্যালহেইম

গেইমপ্লের ধরন অনুসন্ধান আর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গেইমারকে আরও উৎসাহিত করে। টিউটোরিয়াল আর গাইডের পেছনে গেইমারদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়ক্ষেপনকে বলা চলে ভ্যালহেইমের প্রতি গেইমারদের আগ্রহের প্রমাণ।

প্ল্যাটফর্ম: পিসি। 

ওয়াইল্ডারমিথ

‘ওয়াইল্ডারমিথ’-কে বলা হচ্ছে অসংখ্য সম্ভাবনার গল্পের বই। প্রতিবার নতুন ক্যাম্পেইন শুরু করলেই একদল নতুন ‘হিরো’ নিয়ে আসে ‘টার্ন বেইজড স্ট্র্যাটেজি’ গেইমটি। আর প্রতিটি চরিত্রেরই থাকে আলাদা ব্যক্তিত্ত্ব, ইতিহাস, আবেগ ও চারিত্রিক ত্রুটি। চরিত্রগুলো কীভাবে জোট বাঁধবে, বয়সে বাড়তে থাকবে এবং এক পর্যায়ে অবসরে যাবে, তার সবই থাকে গেইমারের হাতে। চরিত্রগুলোর ভূমিকা আদৌ ইতিবাচ হবে নাকি নেতিবাচক কিছু, সেটি নির্ধারণ করবেন গেইমার নিজেই।

ছবি: ওয়াইল্ডারমিথ

গেইমের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের মধ্যেই নানা সম্পর্কে জড়াবে চরিত্রগুলো। কেউ হয়তো প্রেমে পড়বে, কেউ হয়তো জড়িয়ে পড়বে প্রতিযোগিতায়। কিন্তু এ সবকিছুর বাইরে, ওয়াইল্ডারমিথের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিকটি হচ্ছে এর গল্পগুলো, যা গেইমারের আবেগকে সরাসরি প্রভাবিত করবে।   

প্ল্যাটফর্ম: পিসি।