জুম মিটিংয়ে হ্যাকারদের অনুপ্রবেশের বিষয়টি ‘জুমবম্বিং’ নামেই বেশি পরিচিত। অনেক সময় হ্যাকাররা এভাবে মিটিংয়ে অনুপ্রবেশ করে পর্নোগ্রাফি দেখায়, বর্ণবাদী শব্দ ব্যবহার করে বা অন্যান্য আপত্তিকর কনটেন্ট পোস্ট করে।
জুমের প্রাথমিক এই সমঝোতা শনিবার বিকেলে আদালতে নথিভুক্ত করা হয়েছে। রয়টার্স উল্লেখ করেছে, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের স্যান হোসের বিচারক লুসি কোহ-এর অনুমোদন লাগবে এই সমঝোতায়।
জুম জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ক্লাস অ্যাকশন মামলার সাবস্ক্রাইবাররা নিজেদের মূল সাবস্ক্রিপশনের ১৫ শতাংশ রিফান্ড পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হবেন বা ২৫ ডলার পাবেন। এটি নির্ভর করবে কোন অঙ্কটি বড় সেটির উপর। আর অন্যান্যরা ১৫ ডলার পর্যন্ত রিফান্ড পেতে পারেন।
প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতেও সম্মত হয়েছে। যেমন- কোনো মিটিং হোস্ট বা অন্য অংশগ্রহণকারী মিটিংয়ে তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ব্যবহার করলে, সে ব্যাপারে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করা এবং কর্মীদের জন্য গোপনতা ও ডেটা ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
জুম কোনো অনৈতিক কাজ করেনি উল্লেখ করে সমঝোতার জন্য রাজি হয়েছে। রোববার এক বিবৃতিতে জুম জানিয়েছে, “আমাদের ব্যবহারকারীদের গোপনতা ও নিরাপত্তা জুমের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায় এবং আমরা ব্যবহারকারীদের আমাদের উপর রাখা বিশ্বাসকে গুরুত্বের সঙ্গে নেই।”
রয়টার্স জানিয়েছে, বিচারক কোহ মার্চের ১১ তারিখে বাদীদের কিছু চুক্তি-ভিত্তিক দাবি অনুসরণ করতে দেওয়ার পর এসেছে শনিবারের এই সমঝোতাটি।
ক্লাস সদস্যদের কাছ থেকে জুম সাবস্ক্রিপশন বাবদ মোট একশ’ ৩০ কোটি ডলার পেয়েছে। তবে বাদীদের আইনজীবিরা আট কোটি ৫০ লাখ ডলারের সমঝোতাকে মামলার ঝুঁকি বিবেচনায় যুক্তিসঙ্গত হিসেবে ধরছেন। আইনি খরচ বাবদ দুই কোটি দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ওই আইনজীবিদের।
এর আগে বিচারক কোহ জানিয়েছিলেন, ‘ফেডারেল কমিউনিকেশনস ডিসেন্সি অ্যাক্ট’-এর ২৩০ ধারা অনুসারে জুমবম্বিংয়ের অভিযোগ থেকে জুম “অনেকটাই” নিরাপদ। আইনের ওই ধারাটি ব্যবহারকারীর কনটেন্টের দায় থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে নিরাপত্তা দেয়।
কোভিড-১৯ মহামারীতে বাসা-থেকে-কাজ করতে হচ্ছে বহু মানুষকে। এ সময়টিতে জুমের গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে ছয় গুণ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে জুমের কর্মী সংখ্যা ছিল ১০ জনের বেশি এবং গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৭১ হাজার ৯০০। কিন্তু ২০২১ সালের এপ্রিলের হিসেব অনুসারে তাদের গ্রাহক সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৯৭ হাজারের ঘরে।
তবে মানুষের টিকা নেওয়া এবং অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে ফিরতে থাকার কারণে আগামীতে ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার কমতে পারে বলে জানিয়েছে জুম।