স্মার্টফোন অ্যাপে ‘মিনি চেক-আপ’ চলছে সিঙ্গাপুরে

সিঙ্গাপুরের ৪১ বছর বয়সী এক নির্মাণ শ্রমিক প্রতিদিন কাজ শুরু করার আগে নিজের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যগত পরীক্ষাগুলো সেরে নেন। এ কাজে কোনো ক্লিনিক বা সেবিকার সাহায্য নেন না তিনি। অ্যাপের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয় গোটা প্রক্রিয়াটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2021, 11:47 AM
Updated : 24 Feb 2021, 11:47 AM

মাত্র ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে হৃদস্পন্দন, অক্সিজেনের মাত্রা এবং স্ট্রেস মাত্রা সম্পর্কিত তথ্য হাতে পেয়ে যান তিনি। ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন কি না, তা-ও জানিয়ে দেয় অ্যাপটি। ভিন্নধর্মী ওই অ্যাপটি তৈরি করেছে সিঙ্গাপুরের স্টার্টআপ নার্ভোটেক। বর্তমানে অ্যাপটি ব্যবহার করছে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান কাজিমা।

শহর কর্তৃপক্ষ কোভিড-১৯ সংক্রমণের ব্যাপারে কড়া সতর্কতা অবলম্বন করছে। তারা কোনো ভাবেই গত বছরের পুনরাবৃত্তি চাইছে না। উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুরের অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে গত বছর কয়েকটি করোনাভাইরাস ক্লাস্টার ধরা পড়েছিল।

কাজিমা শ্রমিকরা অ্যাপটি ব্যবহার করছেন ডিসেম্বর থেকে। গোটা ব্যাপারটিই সরকারি একটি কর্মসূচীর অংশ। ওই কর্মসূচীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাতে পরীক্ষাধীন পর্যায়ে থাকা প্রযুক্তি পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। প্রযুক্তিগুলোর সাহায্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চেষ্টা করছে কোভিড পরবর্তী জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে।

ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অ্যাপটি শুধু স্মার্টফোনের ক্যামেরার উপর নির্ভর করে। অ্যাপ ব্যবহারকারীর ত্বকে আলোর প্রতিবিম্বের পরিবর্তন দেখে রায় জানায় অ্যাপটি। মূলত এটি হৃদস্পন্দনের মধ্যবর্তী সময়ে অভ্যন্তরে প্রবাহিত রক্তের হিসেবটি বুঝে নেয়।

নার্ভোটেক প্রতিষ্ঠাতা জনাথান লাউ জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুর সরকার প্রযুক্তিটির ব্যাপারে অনেক আগ্রহ দেখিয়েছে। “আমরা স্বাস্থ্য সেবাদাতাদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখেছি, ব্যক্তিগত এবং সরকারি দুই খাতেই।”

লাউ এ ধরনের কাজ করার ধারণা পেয়েছেন ব্যক্তিগত জীবন থেকে। পাইলট হিসেবে কর্মরত থাকার সময় ক্রমাগত চেক-আপের মধ্য দিয়ে যেতে হতো তাকে। পরবর্তীতে নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। পাইলটদের স্বাস্থ্যে পরিধেয় প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরে রাখতো প্রতিষ্ঠানটি।

মহামারী আঘাত হানার পর আরও বড় পরিসরে গোটা ব্যাপারটি নিয়ে আসার পরিকল্পনা নেন লাউ। তবে, এখনও নিয়ন্ত্রকদের সবুজ বাতির অপেক্ষায় রয়েছে অ্যাপটি। ‘ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুর’স ইন্সটিটিউট অফ হেলথ ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি’র পরিচালক চুই টেক লিম জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ এই অ্যাপের অনুমতি দিলে বড় মাপের প্রভাব পড়বে।

“নার্ভোটেক যা করার প্রস্তাব দিচ্ছে তাতে হয়তো গোটা পরিস্থিতিই পাল্টে যেতে পারে।” – বলেছেন লিম।