আগের মাসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যমটি স্বীকার করে যে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে অবৈধভাবে ৮.৭ কোটি গ্রাহকের তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে ফেইসবুক। প্লাটফর্মটি ছাড়ার ঘোষণা দেন খ্যাতিমান ব্যক্তিসহ অনেক সাধারণ গ্রাহক।
তথ্য কেলেঙ্কারির পরও কতো সংখ্যক গ্রাহক সামাজিক মাধ্যমটিতে আস্থা রাখছেন তা জানতে সম্প্রতি জরিপ চালিয়েছে রয়টার্স/ইপসস। জরিপে দেখা গেছে এক চতুর্থাংশ গ্রাহক বলছেন তারা আগের চেয়ে কম ফেইসবুক ব্যবহার করেন। অন্যদিকে আরেক চতুর্থাংশ গ্রাহক বলেন আগের চেয়েও বেশি ফেইসবুক ব্যবহার করছেন তারা।
জরিপে অংশ নেওয়া বাকি অর্ধেক গ্রাহক জানিয়েছেন তাদের ফেইসবুক ব্যবহারে কোনো পরিবর্তন আসেনি-- খবর বিবিসি’র।
শুধু মার্কিন নাগরিকদের নিয়েই জরিপটি চালানো হয়েছে। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ফেইসবুকের বিক্রয় প্লাটফর্ম কেমন কাজ করে সেটিই দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন বিশ্লেষকরা। তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনায় উত্তেজনা বেড়েছে দ্বিতীয় প্রান্তিকেই।
বছরের প্রথম প্রান্তিকে ফেইসবুকের বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এতে প্রতিষ্ঠানের লাভ হয়েছে ৪৯০ কোটি মার্কন ডলার। আগের বছর এই প্রান্তিকে লাভের অঙ্কটা ছিল ৩০০ কোটি ডলার।
জরিপে অংশ নেওয়া ৬৪ শতাংশ গ্রাহক জানিয়েছেন দিনে অন্তত একবার ফেইসবুক ব্যবহার করেন তারা। মার্চে তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনা সামনে আসার পরপরই চালানো আরেক জরিপে পাওয়া গিয়েছিল ৬৮ শতাংশ গ্রাহক দিনে অন্তত একবার ফেইসবুক ব্যবহার করেন।
ফেইসবুকের বর্তমান গোপনীয়তা সেটিংস নিয়ে সচেতন কিনা জরিপের এমন প্রশ্নের জবাবে ৭৪ শতাংশ মার্কিনি জানিয়েছেন তারা এ বিষয়ে সচেতন এবং ৭৮ শতাংশ জানিয়েছেন তারা জানেন কীভাবে সেটিংস পরিবর্তন করতে হয়। টুইটারের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা সেটিংস নিয়ে সচেতন ৫৫ শতাংশ গ্রাহক এবং ৫৮ শতাংশ সেটিংস পরিবর্তন করতে জানেন। ফেইসবুকের ছবি শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রামের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি যথাক্রমে ৬০ শতাংশ ও ৬৫ শতাংশ।
ওয়েডবাশ সিকিউরিটিস-এর বিশ্লেষক মাইকেল প্যাচার বলেন, ফেইসবুক ভাগ্যবান যে সম্ভবত এই তথ্য শুধু রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের জন্যই ব্যবহার করা হয়েছে, আরও ক্ষতিকর কিছুতে নয়।
“আমি এখন পর্যন্ত এমন কোনো লেখা পড়িনি যেখানে বলা হয়েছে তথ্য বেহাতে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন,” বলেন প্যাচার।
জরিপ নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য জানায়নি ফেইসবুক।
গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট গণভোট প্রভাবিত করার অভিযোগ রয়েছে ফেইসবুকের বিরুদ্ধে। চলতি সপ্তাহে প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।
অন্যদিকে ফেইসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিজেদের অনুসন্ধান চালিয়ে যাবে প্লাটফর্মটি।