নগদ মুদ্রাহীন রাষ্ট্র ‘গড়বে’ দক্ষিণ কোরিয়া

“আপনার মুদ্রা হস্তান্তর করুন”- নাগরিকদের এমন বার্তাই দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

রিফাত আহসানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2016, 11:55 AM
Updated : 5 Dec 2016, 11:55 AM

এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে অগ্রসর ও সুসংহত জাতিকে নগদ মুদ্রাহীন সমাজে অভ্যস্ত করা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানিয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে নগদ মুদ্রাহীন রাষ্ট্রের প্রথম ধাপ অর্জনের আশা করছে দেশটি।

দ্য ব্যাংক অফ কোরিয়া বৃহস্পতিবার ঘোষণা করে, তারা নগদ মুদ্রার প্রচলন কমাতে তাদের প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করবে। উল্লেখ্য, দেশটির সর্বোচ্চ মুদ্রার মান ০.৫০ ডলারেরও কম।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা ভোক্তাদের ‘টি মানি’ কার্ড-ইলেকট্রনিক ভ্রমণ পাস ব্যবহার করতে উৎসাহিত করছে, যা দিয়ে তারা মেট্রো ভাড়া, ট্যাক্সি ভাড়া, এমনকি ৩০,০০০ দোকানে কেনাকাটাও করতে পারবেন।

নগদ লেনদেনের উপর খুব বেশি নির্ভর করে না বিশ্বের এমন কয়েকটি দেশের একটি দক্ষিণ কোরিয়া। ব্যাংক অফ কোরিয়ার মতে, দেশটিতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের হারও অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি, নাগরিক প্রতি ক্রেডিট কার্ড প্রায় ১.৯টি। আর মাত্র ২০ শতাংশ কোরীয় নাগরিক কাগজের মুদ্রার বিনিময়ে লেনদেন করে থাকেন। 

অন্যদিকে, নগদ মুদ্রার প্রচলন উঠে গেলে দেশটির খরচও সাশ্রয় হবে অনেক। ব্যাংক অফ কোরিয়া শুধু মুদ্রা তৈরিতেই বছরে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করে। এ ছাড়াও এসব মুদ্রা সংগ্রহ, পরিচালনা ও বিলি করার জন্য প্রতিষ্ঠানের পেছনেও প্রচুর পরিমান অর্থ ব্যয় হয়।

নগদ মুদ্রার ব্যবহার বন্ধ হলে প্রতি বছর দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়াও এর মাধ্যমে কম প্রবৃদ্ধি, কম মুদ্রাস্ফীতি এবং স্বল্প সুদের মতো সমস্যা মোকাবেলায় সহায়তা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু এর জন্য নাগরিকদেরও যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন সিউলের ক্রেডিট ফিনান্স ইনস্টিটিউট-এর গবেষক লি হো চ্যান।

সুইডেনের অর্ধেকেরেও বেশি প্রায় ১,৬০০ ব্যাংকের শাখা নগদ অর্থ রাখে না বা নগদ আমানত গ্রহন করে না। এ দিকে নরওয়ের সবচেয়ে বড় ব্যাংকও নগদ মুদ্রাহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবে বলে জানিয়েছে।