রাশিয়ায় কোনো হার্ডওয়্যার যায়নি: এরিকসন

“নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা সেই সব পণ্যে সফটওয়্যার ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি, যা আমরা আগ্রাসন শুরুর আগেই পাঠিয়েছি। এটি ছাড়া বিভিন্ন চুক্তিগত বাধ্যবাধকতা পূরণ করা অসম্ভব।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2022, 03:17 PM
Updated : 24 Sept 2022, 03:17 PM

ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ক্লায়েন্টদের কেবল সফটওয়্যার ও প্রযুক্তিগত সমর্থন প্রদান এবং দেশটির মোবাইল অপারেটরদের কাছে কোনো টেলিযোগাযোগ সামগ্রী বিক্রি না করার কথা জানিয়েছে সুইডিশ কোম্পানি এরিকসন।

কোম্পানির পণ্য পাঠানো চালিয়ে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সুইডিশ গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুক্রবার বিষয়টি পরিষ্কার করলো এরিকসন।

ওই দিন সকালে কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য কমেছে চার শতাংশ।

কোম্পানিটি রাশিয়ায় ব্যবসা স্থগিত করে এপ্রিল মাসে। অগাস্টে তারা জানায়, আসন্ন মাসগুলোতে দেশটি থেকে পুরোপুরিভাবে বেরিয়ে যাবে তারা।

দেশটিতে ৯০ কোটি সুইডিশ ক্রোন (আট কোটি ১০ লাখ ডলার) জরিমানা গোনার পাশাপাশি কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে চারশ কর্মী ছাটাই করেছে কোম্পানিটি।

“বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা সেই সব পণ্যে সফটওয়্যার ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি, যা আমরা আগ্রাসন শুরুর আগেই পাঠিয়েছি। এটি ছাড়া বিভিন্ন চুক্তিগত বাধ্যবাধকতা পূরণ করা অসম্ভব।” --বলেছেন এক মুখপাত্র।

“যখন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসে, তখন থেকেই রাশিয়ার গ্রাহকদের পণ্য পাঠানো বন্ধ করেছি আমরা।”

এ বছর শেষ হওয়ার আগেই রাশিয়া থেকে বের হওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি নকিয়া। তারা আরও বলেছে, বিভিন্ন নেটওয়ার্কের সঙ্গে তাদের চুক্তিগত ও মানবিক বাধ্যবাধকতা বেশ সীমিত।

‘এসভেরিজেস রেডিও একো’র তথ্য অনুযায়ী, সুইডেনের ‘ইনস্পেকট্রোরেট অফ স্ট্রাটেজিক প্রোডাক্টস’-এর কাছে এরিকসন ১২টি নিষেধাজ্ঞা তোলার আবেদন করলেও কেবল সাতটির অনুমোদন মিলেছে। সুইডিশ কর্তৃপক্ষের এই নিষেধাজ্ঞা তালিকায় আছে টেলিযোগাযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন সফটওয়্যার ও প্রযুক্তি সেবা।

এরিকসন রাশিয়ায় যেসব পণ্য রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলো সামরিক বাহিনীর ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হতে পারে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

তবে, এরিকসন বলেছে, তাদের পণ্য কেবল অসামরিক ব্যবহারের জন্যই তৈরি, সামরিক বাহিনী নয়।

এক বিবৃতিতে সুইডিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, কেবল অসামরিক ব্যবহারকারীদের জন্য এ ছাড় দেওয়া হয়েছে।

দুইজন বিশ্লেষক বলেছেন, রাশিয়া সম্পর্কিত অভিযোগটি এরিকসনের জন্য সম্মানজনক নয়। ফেব্রুয়ারিতেও ইরাকের ‘ইসলামিক স্টেট’কে আর্থিক সহায়তার একটি অভিযোগ উঠে এসেছিল তাদের বিরুদ্ধে। ফলে তদন্তে নামে বিভিন্ন মার্কিন সংস্থা এবং এক তৃতীয়াংশের চেয়েও বেশি বাজারদর হারায় কোম্পানিটি।

“অনুমোদন নেওয়ায় কোনো নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেনি এরিকসন … তবে নিজের বক্তব্য নিয়েও বেশ অনড় তারা। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনে রাশিয়ার সকল গ্রাহকের ডেলিভারি স্থগিত করার কথা বলেছিল তারা।” --বলেছেন জাইস্ক ব্যাংকের বিশ্লেষক অ্যান্ডার হাউলান্ড ভলসেন।

“মোবাইল টেলিফোনি নাগরিক ব্যবহারের জন্য হলেও এতে একটি রপ্তানি লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়ে। এর কারণ মূলত উন্নত এনক্রিপশন প্রযুক্তি, যা আমাদের পণ্যে এম্বেড করা আছে ও সকল দেশের জন্যই প্রযোজ্য এটি।” --বলেছেন এরিকসন মুখপাত্র।