বিগ টেকের ওপর টিনএজারদের এমন আস্থা হারানোর বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বড় প্রযুক্তি কোম্পানির প্রতি তাদের ক্রমাগত অসন্তোষেরই প্রতিফলন।
Published : 12 Feb 2025, 02:20 PM
অনলাইনে ভুয়া কনটেন্ট দেখে আমেরিকান টিনএজাররা ক্রমশ বিভ্রান্ত হচ্ছে বলে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
নতুন গবেষণা বলছে, বর্তমানে ভুয়া কনটেন্ট তৈরির বিষয়টিকে অনেক সহজ করে তুলেছে এআই। অনেক আমেরিকান টিনএজার বলেছেন, ইন্টারনেটে এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি ছবি, ভিডিও বা অন্যান্য কনটেন্টের কারণে বিভ্রান্ত হচ্ছেন তারা।
বুধবার অলাভজনক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ‘কমন সেন্স মিডিয়া’র প্রকাশিত এ গবেষণায়, ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী এক হাজার টিনএজারকে বিভিন্ন জেনারেটিভ এআই টুলের মাধ্যমে তৈরি মিডিয়া সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন করে গবেষণা দলটি।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অনলাইনে ভুয়া কনটেন্টের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ টিনএজার। তবে ৪১ শতাংশেরও বেশি বলেছেন, তারা এমন কনটেন্টের মুখে পড়েছেন যা আসল হলেও বিভ্রান্তিকর। ২২ শতাংশ বলেছেন, তারা এমন তথ্য শেয়ার করেছেন যা শেষ পর্যন্ত ভুয়া বলে প্রমাণ মিলেছে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে করা ‘কমন সেন্স মিডিয়া’র এ গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ জন টিনএজারের মধ্যে কম করে হলেও জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করে দেখেছেন সাতজন। যেসব টিনএজার অনলাইনে ভুয়া কনটেন্টের মুখে পড়েছেন তারা বলেছেন, অনলাইনে তাদের তথ্য যাচাইকে আরও বাড়িয়ে তুলবে এআই।
গবেষণায় অংশ নেওয়া টিনএজারদের কাছে গুগল, অ্যাপল, মেটা, টিকটক ও মাইক্রোসফটের মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানি সম্পর্কে তাদের মতামত সম্পর্কেও প্রশ্ন ছিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
গবেষণা বলছে, এআই ব্যবহারের বিষয়ে দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নিতে বড় ধরনের প্রযুক্তি কোম্পানি যে ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তার ওপর আস্থা রাখেন না প্রায় অর্ধেক মার্কিন টিনএজার।
“জেনারেটিভ এআই যে সহজ ও দ্রুত উপায়ে ব্যবহারকারীদের কাছে অবিশ্বাস্য দাবি ও ভুয়া খবর ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করছে তা টিনএজারদের মিডিয়া ও সরকারের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা কমিয়ে আনতে পারে,” উল্লেখ রয়েছে গবেষণায়।
বিগ টেকের ওপর টিনএজারদের এমন আস্থা হারানোর বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বড় প্রযুক্তি কোম্পানির প্রতি তাদের ক্রমাগত অসন্তোষেরই প্রতিফলন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে সিএনএন।
২০২২ সালে টুইটার কেনার পর প্ল্যাটফর্মটির নাম ‘এক্স’ রাখেন ইলন মাস্ক। এটি কেনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির মডারেশন টিমকে ভেঙে দিয়েছেন তিনি। যার মাধ্যমে প্লাটফর্মটিতে ছড়িয়ে পড়েছে ভুয়া তথ্য ও ঘৃণামূলক বক্তব্য।
সম্প্রতি মেটার প্রধান ও ফেইসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, নিজেদের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট-চেকার’দের বদলে ‘কমিউনিটি নোট’ আনার পদক্ষেপ নিয়েছে কোম্পানিটি।
মেটার এমন পদক্ষেপের কারণে ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও এর অন্যান্য বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আরও ক্ষতিকর কনটেন্ট চলে আসবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে সিএনবিবি।
“অনলাইন কনটেন্টের নির্ভুলতা সম্পর্কে টিনএজাদের ধারণা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রতি তাদের অবিশ্বাসেরই ইঙ্গিত,” উল্লেখ রয়েছে গবেষণায়।
“তাই বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির উচিত স্বচ্ছতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া ও এমন ফিচার তৈরি করা, যা তাদের প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা কনটেন্টের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ব্যবহারকারীদের কাছে বাড়িয়ে তুলবে।”