দেশ ছাড়তে গিয়ে বিমানবন্দরে ধরা বাংকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান

আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের মুখে থাকা পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত নিষেধাজ্ঞার পরও দেশ ছাড়তে গিয়ে ধরা খেয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2021, 01:25 PM
Updated : 29 June 2021, 04:16 PM

মঙ্গলবার সকালে তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আটকে দেওয়ার কথা দুপুরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাংকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিতকে এয়ারপোর্টে আটক করা হয়েছে।”

ইমিগ্রেশন পুলিশের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুদকের একটি মামলার ভিত্তিতে দেশ ত্যাগ না করার তালিকায় তার নাম ছিল। সে কারণে টার্কিশ এয়ারলাইনসে করে দেশ ছাড়ার আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ১৫ জুন বাংকোসিকিউরিটিজে বড় ধরনের অনিয়ম পাওয়ায় লেনদেন বন্ধ করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে ঘাপলা করার অভিযোগে বাংকো সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

পাশাপাশি বাংকো সিকিউরিটিজের মালিকরা যাতে দেশ তাগ করতে না পারেন, সেজন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।

এই ব্রোকারেজ হাউসের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দিন থেকে টাকা ফেরত দিতে না পারাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করে আসছিলেন এর গ্রাহকরা, যারা তাদের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে টাকা জমা দিয়েছিলেন।

তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে ডিএসইর কর্মকর্তারা দেখতে পান, এই হাউসে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার জন্য খোলা সমন্বিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬০ কোটি টাকার ঘাপলা রয়েছে।

স্টক এক্সচেঞ্জের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাউসটির মালিকরা গ্রাহকদের এই টাকা নয়-ছয় করেছেন।

আরও তদন্তের পর জানা যাবে আসলে কী ঘটেছে; তারা টাকা সরিয়ে ফেলেছেন নাকি গ্রাহকদের টাকা দিয়ে নিজেরা শেয়ার কিনেছেন।

বাংকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিউল ইসলাম।

এর আগে গত বছর জুনে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ নামে ডিএসইর আরেক ব্রোকারেজ হাউস আকস্মিক বন্ধ করে সটেক পড়েন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহিদ উল্লাহ।

শেয়ার ও টাকা আটকে যাওয়ায় তখনও বিপাকে পড়েন অনেক বিনিয়োগকারী।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হয় ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে। এ জন্য একজন বিনিয়োগকারীকে কোনো হাউসে বেনিফিসিয়ারি অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়।

টাকাও জমা দিতে হয় হাউসের নামে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। প্রতিটি হাউস এজন্য একটি গ্রাহক সমন্বিত অ্যাকাউন্ট খুলে সেটিতে গ্রাহকদের টাকা জমা রাখে।

গ্রাহকদের শেয়ার কেনাবেচার টাকা এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে।

মতিঝিলের ইস্পাহানি ভবনে অবস্থিত বানকো সিকিউরিটিজের ডিএসই ট্রেক নম্বর ৬৩।

ডিএসইতে ২৪৬ জন ট্রেক হোল্ডার বা ব্রোকার আছেন। এদের মধ্যে ২৩৮ জন সক্রিয় রয়েছেন, অর্থাৎ লেনদেন করেন।

নতুন করে সম্প্রতি আরও ৪৬ ট্রেক দিয়েছে দেশের প্রধান এই স্টক এক্সচেঞ্জ।