পুঁজিবাজারে প্লেসমেন্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত

প্লেসমেন্ট শেয়ার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসি। এই সংক্রান্ত আইন সংশোধনের সিদ্ধান্তও হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2019, 06:54 PM
Updated : 29 April 2019, 07:29 PM

পুঁজিবাজারে দরপতনের প্রেক্ষাপটে সোমবার অংশীদারদের নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। বৈঠকে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ ও ডিবিএ, বিএমবিএর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্লেসমেন্টে শেয়ার ইস্যু করা বন্ধ হবে। এছাড়া আইপিও পূর্ব সকল শেয়ারে ৩ বছর লক-ইন (বিক্রয় অযোগ্য) রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

কোনো কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসার আগে ইস্যু ব্যবস্থাপক বা পরিচালকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে পছন্দসই লোকদের কাছে কিছু শেয়ার বিক্রি করে, এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় প্রাইভেট প্লেসমেন্ট বা প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট শেয়ার।

বর্তমান আইনে একটি কোম্পানি প্রাইভেট প্লেসমেন্টে শেয়ার ছাড়ার মাধ্যমে বাজার থেকে মূলধন তুলতে পারে। তবে এর উপর এক বছরের লক-ইন আছে, অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে এই শেয়ার হস্তান্তর করা যাবে না।

২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের কারণ অনুসন্ধানে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বাধীন তদন্ত প্রতিবেদনে প্লেসমেন্টকে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল।

ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী সম্প্রতি এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে এই প্রাইভেট প্লেসমেন্টকে বাজারে অস্থিরতার জন্য দায়ী করেন।

তিনি লেখেন, “চলমান এই মন্দার প্রধান কারণ হিসেবে বেপরোয়া প্লেসমেন্টকে দায়ী করছে অনেকে।
প্লেসমেন্টের জন্য প্রতিনিয়ত বাজার থেকে টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে।

“একদিকে প্লেসমেন্টধারীরা কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ৩০০% লাভে শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিচ্ছে। অন্যদিকে তাদের এই লাভ দেখে অন্য অনেক বিনিয়োগকারী সেকেন্ডারি বাজার থেকে টাকা তুলে নিয়ে প্লেসমেন্ট শেয়ার কিনছে। এছাড়া গত কয়েক বছরে তালিকাভুক্ত নতুন কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগই নগদ লভ্যাংশ না দেওয়ায় বিনিয়োগকারীদের কাছে টাকা আসছে না।”

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, “প্লেসমেন্ট আইন বাতিল করা হবে। আগামীতে বিএসইসির অনুমোদন নিয়ে প্লেসমেন্টে কোনো শেয়ার ইস্যু করার সুযোগ থাকবে না।

“একইসঙ্গে আইপিওকালীন সকল শেয়ারে ৩ বছর লক-ইন থাকবে, যা প্রসপেক্টাসের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রকাশের দিনের পরিবর্তে লেনদেন শুরুর দিন থেকে গণনা করা হবে। এছাড়া আইপিওতে ফিক্সড প্রাইস মেথডে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা ও বুক বিল্ডিং মেথডে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করতে হবে।”

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা নিয়ে যে জটিলতা রয়েছে, তা সমাধানের আশ্বাস গভর্নর দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।