চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির সংশোধিত প্রস্তাবে সায় ডিএসইর

চীনের শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার করার সংশোধিত প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ারহোল্ডাররা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2018, 11:49 AM
Updated : 30 April 2018, 11:49 AM

সোমবার ঢাকার হোটেল পূর্বানীতে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে কোম্পানির সাধারণ সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দেওয়া শর্তানুযায়ী, শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ সমন্বয়ে গঠিত এই কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে ডিএসইর চুক্তির জন্য সংশোধিত প্রস্তাবে শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি চান আবুল হাশেম।

উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ারহোল্ডারদের উপস্থিতিতে ডিএসইর ‘ব্লকড অ্যাকাউন্টে’ রক্ষিত ২৫ শতাংশ বা ৪৫০,৯৪৪,১২৫টি সাধারণ শেয়ার এই কনসোর্টিয়ামের কাছে বিক্রয়ের চুক্তি এবং সেই সাথে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে অনুমোদিত ও গৃহিত হয়।

এর আগে ১৯ মার্চ চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির জন্য সংশোধিত প্রস্তাব আনার জন্য ডিএসইকে নির্দেশনা দেয় বিএসইসি।

ওই নির্দেশনায় বলা হয়, সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জকে নিয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামের শেয়ার ক্রয় চুক্তিসহ কৌশলগত অংশীদার নেওয়ার যে প্রস্তাব কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে, যাচাই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তা অনুমোদনযোগ্য নয়।

তবে দেশের আইন ও ডিএসইর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী প্রস্তাবের বেশিরভাগ শর্তাবলী প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে চীনা কনসোর্টিয়াম এর মধ্যেই ডিএসইকে নিশ্চিত করেছে বলে প্রতীয়মান হওয়া কিছুটা নমনীয় হয়েছে কমিশন।

কমিশন বলেছে, “বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের স্বার্থে কিছু শর্ত পূরণসাপেক্ষে সংশোধিত প্রস্তাব জমা দিতে ডিএসইকে সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।”

চীনের শেনচেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জকে কৌশলগত অংশীদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ডিএসই কর্তৃপক্ষ গত ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করে। বিএসইসি ওই দিনই প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য চার সদস্যের এক কমিটি করে।

চিঠিতে বলা হয়, সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং শেনচেন স্টক এক্সচেঞ্জকে নিয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম ডিএসইর শেয়ার ২২ টাকা দরে কিনতে চেয়েছে। একই সঙ্গে কিছু টেকনিক্যাল সাপোর্টের কথা বলেছে। ডিএসইর ভাষ্য অনুযায়ী এই টাকার পরিমাণ হবে ৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু এর নিরপেক্ষ মূল্যায়ন নেই। এছাড়াও চীনের বিনিয়োগের প্রস্তাবে কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

চীনা প্রস্তাবের শর্তগুলো হল- কৌশলগত অংশীদারিত্বের এই চুক্তি হতে হবে যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী। দ্বিতীয়ত, কোনো বিভেদ দেখা দিলে তার সমাধান হতে হবে যুক্তরাজ্যের আরবিট্রেশন আইন অনুযায়ী। তৃতীয়ত, ডিএসইর আর্টিকেল পরিবর্তন করে কিছু বিষয় যুক্ত করতে হবে। সেসব বিষয় পরে কখনও পরিবর্তন করতে চাইলে ডিএসইর বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) পাস করার আগে কনসোর্টিয়ামের অনুমোদন নিতে হবে।

কৌশলগত অংশীদার পেতে চার মাস আগে ডিএসইর আহ্বানে দুটি কনসোর্টিয়াম দরপত্র জমা দেয়। এদের মধ্যে চীনের দুই এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম ছাড়া অন্য দরদাতা ছিল ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, ফ্রন্ট্রিয়ার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক-এর কনসোর্টিয়াম।

দুটি প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে ১০ ফেব্রুয়ারি চীনের কনসোর্টিয়ামকে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই।