যোগ করা সময়ে স্পট কিক থেকে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটি করেন ইলকাই গিনদোয়ান।
Published : 05 Jan 2024, 03:42 AM
চোট ছোবল দেওয়ার পরপরই গোল হজম করল বার্সেলোনা। বিরতির আগে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া মনোভাব সেভাবে ফুটে উঠল না তাদের খেলায়। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরার পরও তাদেরকে দেখা গেল না চেনা ছন্দে। তবে ঠিকই শেষ দিকের গোলে পয়েন্ট হারানোর শঙ্কার মেঘ সরিয়ে জয়ের আনন্দে নতুন বছর শুরু করল লা লিগার শিরোপাধারীরা।
লা লিগায় বৃহস্পতিবার রাতে লাস পালমাসের মাঠে ২-১ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। গত বছর তারা শেষ করেছিল প্রীতি ম্যাচে ক্লাব আমেরিকার কাছে হেরে। ২০২৪ সালের শুরুতে শাভি এর্নান্দেসের দল সাদামাটা ফুটবল খেলেও খুঁজে পেল জয়ের পথ।
পালমাসের বিপক্ষে এ নিয়ে লিগে বার্সেলোনা ১৫ ম্যাচ অজেয় থাকল। লিগ টেবিলে শীর্ষে থাকা রেয়াল মাদ্রিদের (৪৮ পয়েন্ট) সঙ্গে ব্যবধানও কমিয়ে আনল। ১৯ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে শাভির দল। রেয়ালের সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে জিরোনা।
নতুন বছর, নতুন শুরু হবে কি?-উত্তর খুঁজতে গিয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে এক মিনিটের ব্যবধানে দুই ধাক্কায় কোণঠাসা হয়ে পড়ে বার্সেলোনা। একাদশ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন জোয়াও কানসেলো; বদলি নামেন আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন। পরের মিনিটেই গোল হজম করে বসে তারা।
ডান দিক দিয়ে আক্রমণ শাণানো সান্দ্রো রামিরেস বক্সে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান, দ্রুত সাড়া দিতে পারেননি কুন্দে-আরাউহোদের কেউ। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ক্লিয়ার করার শেষ চেষ্টা করেছিলেন গোলরক্ষক ইনাকি পেনা, কিন্তু তিনি বলের নাগাল পাওয়ার আগেই টোকায় জাল খুঁজে নেন মুনির এল হাদ্দাদি।
চার বছর বার্সেলোনায় খেলা মুনির চলতি লা লিগায় পেলেন দ্বিতীয় গোল।
এগিয়ে গিয়ে আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠা পালমাস বার্সেলোনার রক্ষণে ভীতি ছড়াতে থাকে। ২৩তম মিনিটে সান্দ্রোর কাছের পোস্টে নেওয়া শট আটকান পেনা। পাঁচ মিনিট পর গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় এবং ভাগ্যের ছোঁয়ায় দ্বিতীয় গোল হজম করেনি বার্সেলোনা। হাভিয়ের মুনোসের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরাল ভলি ফেরান পেনা, এরপরই সান্দ্রোর শট তাকে ফাঁকি দিয়ে পোস্টে লেগে ফিরে।
বিবর্ণ বার্সেলোনা প্রথমার্ধে সমতায় ফেরার একমাত্র ভালো সুযোগটি পায় ৩৩তম মিনিটে। ডি ইয়ংয়ের লং পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সের্হি রবের্তো আগুয়ান গোলরক্ষকের উপর দিয়ে চিপ করলে জালের নাগাল পেতে পারতেন, কিন্তু তা না করে তিনি আড়াআড়ি পাস বাড়ান অন্য প্রান্তে থাকা ফেররান তরেসের উদ্দেশে। স্লাইডে সেই চেষ্টা ভেস্তে দেন পালমাসের ডিফেন্ডার মিকা মারমোল।
গোলের জন্য বার্সেলোনার মরিয়া চেষ্টা ফুটে উঠতে থাকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে। ৫১তম মিনিটে বুদ্ধিদ্বীপ্ত টোকায় বল বের করে নিয়ে একক প্রচেষ্টায় আক্রমণে ওঠেন রাফিনিয়া। বক্সের উপরে জায়গা করে শটও নেন, কিন্তু বল উড়ে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। একটু পর লেভানদোভস্কি দুর্বল হেডে হতাশা বাড়ান।
কিছুটা ভাগ্যের পরশে ৫৫তম মিনিটে মলিনতার বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসার উপলক্ষ পায় বার্সেলোনা। বক্সের ভেতর থেকে বিপদমুক্ত করতে জোরাল শট নেন সাউল কোকো, কিন্তু বল লেভানদোভস্কির গায়ে লেগে চলে যায় রবের্তোর পায়ে। শট নিতে জায়গা করতে না পেরে তিনি বাড়ান তরেসকে; এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের শট বলের লাইনে ঝাঁপিয়েও ফেরাতে পারেননি পালমাস গোলরক্ষক।
আক্রমণভাগে নিজের ছায়া হয়ে থাকা লেভানদোভস্কিকে ৭২তম মিনিটে তুলে জোয়াও ফেলিক্সকে এবং রাফিনিয়ার বদলি লামিনে ইয়ামালকে নামান বার্সেলোনা কোচ। এর পাঁচ মিনিট পর মারমোলের হেড দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে গেলে বেঁচে যায় শিরোপাধারীরা।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ফেলিক্সের শট ফিস্ট করে ফেরান গোলরক্ষক। বাতাসে ভেসে থাকা বলে হেড করতে গিয়েছিলেন ইলকাই গিনদোয়ান, কিন্তু তাকে পেছন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে লাল কার্ড দেখেন সিঙ্কগ্রাভেন। স্পট কিকে লক্ষ্যভেদ করেন গিনদোয়ান।
তরেসের বদলি নামা ভিতর খক লা লিগা অভিষেকে পেতে পারতেন জালের দেখা, কিন্তু শেষ দিকে তার শট অল্পের জন্য যায় বাইরে। কিন্তু গিনদোয়ানের গোলটি আগলে রেখে ঠিকই জয়ের রঙে বছর শুরু নিশ্চিত করে বার্সেলোনা।