‘ফিফা সবসময় উরুগুয়ের বিপক্ষে থাকে’

বিশ্বকাপ জুড়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে না আসায় বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন লুইস সুয়ারেস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2022, 10:51 AM
Updated : 3 Dec 2022, 10:51 AM

অন্য ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়া এগিয়ে যাওয়ার পর থেকে সব হারানোর ছাপ দেখা যাচ্ছিল লুইস সুয়ারেসের মুখে। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর লম্বা সময় চোখে জল নিয়ে এক জায়গাতেই বসেছিলেন অভিজ্ঞ এই স্ট্রাইকার। উরুগুয়ে দলের অনেকে যখন রেফারির দিকে উত্তেজিত ভঙ্গিতে ছুটে গেলেন তখনও তিনি নড়েননি। সেই সময়ে না হলেও পরে সব ক্ষোভ উগড়ে দিলেন সুয়ারেস। কাঠগড়ায় তুললেন বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফাকে। 

ঘানার বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে একটা পর্যায়ে শেষ ষোলোয় জায়গা করে নেওয়ার দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল উরুগুয়ের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কম গোল করার কারণে বাদ পরে যায় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সুয়ারেস মনে করেন, বিশ্বকাপে অনেক সিদ্ধান্ত তাদের বিপক্ষে না গেলে চিত্রটা অন্যরকম হতে পারত। 

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করে উরুগুয়ে। পরের ম্যাচে পর্তুগালের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারে প্রথম বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ঘানার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে তাই শুধু জিতলেই হতো না উরুগুয়ের, পক্ষে আসতে হতো পর্তুগাল- দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচের ফলাফলও।

আফ্রিকান দেশটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের কাজ অনেকটাই করে ফেলেছিল উরুগুয়ে। অন্য ম্যাচে ২-১ গোলে জিতে শেষ হাসি হাসে দক্ষিণ কোরিয়া। দুই দলের পয়েন্ট সমান ৪, গোল পার্থক্যও সমান। দুই দলের মধ্যে বেশি গোল করার সুবাদে নকআউট পর্বের টিকেট পায় এশিয়ার দেশটি।

শুরুর একাদশে থাকা সুয়ারেসকে ম্যাচ শেষের আগে তুলে নেওয়া হয়। বেঞ্চে বসে নিজেদের বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হতে দেখে আবেগ সামলাতে পারেননি ৩৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার। মাঠ ছাড়েন চোখে জল নিয়ে।

ম্যাচের শেষ দিকে চ্যালেঞ্জের মুখে এদিনসন কাভানি ডি-বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টির জোর আবেদন জানায় উরুগুয়ে। তবে রেফারি তা নাকচ করে দেন। এনিয়ে শেষ বাঁশি বাজতেই রেফারিকে ঘিরে ধরেন উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা।

এর আগে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মনিটরে কয়েকবার রিপ্লে দেখে একটি পেনাল্টি দেননি রেফারি। ইশারায় দেখিয়েছিলেন যে, ডি-বক্সে ডাইভ দিয়েছিলেন স্ট্রাইকার দারউইন নুনেস। সুয়ারেস মনে করেন, দুটি পেনাল্টিই তাদের প্রাপ্য ছিল এবং ফিফা কখনই তাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয় না।

“দারউইনের (নুনেস) পেনাল্টি খুবই স্পষ্ট ছিল। এদিকেও (কাভানি) ফাউল করা হয়েছিল। মনে হচ্ছে উরুগুয়ের আরও ক্ষমতা থাকতে হবে। ফিফা সবসময় উরুগুয়ের বিপক্ষে থাকে।"

পর্তুগালের বিপক্ষে ম্যাচে উরুগুয়ে দ্বিতীয় গোলটি হজম করেছিল পেনাল্টি থেকে। সুয়ারেসের মতে, গোল পার্থক্যের হিসেবে ‘বিতর্কিত’ পেনাল্টি থেকে ওই গোলটি খেয়ে তাদের ‘ক্ষতি’ হয়েছে।

নিজেদের বিপক্ষে যাওয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা সম্পর্কে ফিফাকে ব্যাখা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সুয়ারেস বলেন, “এগুলো অজুহাত নয়, তবে বিশ্বকাপে অবিশ্বাস্য ঘটনাগুলোই ঘটছে।”

সুয়ারেসের অভিযোগ, ম্যাচ শেষে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হয়নি।