সনের ‘জীবনের দীর্ঘতম ৬ মিনিট’

নিজেদের জয়ের পরও শেষ ষোলোর টিকেট নিশ্চিত হওয়ার জন্য যন্ত্রণাময় সেই অপেক্ষার বর্ণনা দিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অধিনায়ক।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2022, 01:04 PM
Updated : 3 Dec 2022, 01:04 PM

যেন শেষ হয়েও শেষ নয়। পর্তুগালের বিপক্ষে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের পরও নিশ্চিত ছিল না দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় যাওয়া। গ্রুপের অন্য ম্যাচ যে তখনও চলে! সেখানে উরুগুয়ে আরেকটি গোল করলেই সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে এশিয়ার দেশটির-সেই অপেক্ষার যেন আর শেষ হচ্ছিল না। অবশেষে সেখানে শেষের বাঁশি বাজতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে তারা। কোরিয়ার অধিনায়ক সন হিউন-মিং বলছেন, যন্ত্রণাময় অপেক্ষাটা ছিল তার জীবনের দীর্ঘতম ছয় মিনিট।    

এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে শুক্রবার‘এইচ’ গ্রুপের শেষ রাউন্ডে পর্তুগাল-কোরিয়া ম্যাচে নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইন ছিল ১-১। পরের ধাপে যেতে কোরিয়ার সামনে জয়ের বিকল্প ছিল না। ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে যায় তারা। তাতে বড় অবদান সনের।

পাল্টা আক্রমণে নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে যান সন। পেছন থেকে প্রতিপক্ষের একজনের চ্যালেঞ্জ সামলে বক্সের সামনে চলে যান তিনি। সামনে ছিল পর্তুগালের আরও দুই খেলোয়াড়। সন পাসটা দেন বক্সের ভেতরে, আর প্রথম স্পর্শের শটে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা হাং হি-চান।

নিজেদের ম্যাচে শেষ বাঁশি বাজতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সন। আরেক মাঠে তখন ঘানার বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে উরুগুয়ে। আরেকটি গোল করলে কোরিয়ার চেয়ে গোল পার্থক্যে এগিয়ে যাবে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি।

নিজেদের ম্যাচ শেষে মাঠেই একপাশে গোল হয়ে দাঁড়ায় কোরিয়া দল। চোখ ফোনের স্ক্রিনে, ঘানা-পর্তুগাল ম্যাচে। কেউবা দুই হাত জড়ো করে প্রার্থনায়। দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে ম্যাচটি শেষ হতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে তারা।

তিন ম্যাচ শেষে কোরিয়া ও উরুগুয়ের পয়েন্ট হয় সমান ৪, গোল পার্থক্যও সমান। বেশি গোল করায় গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে নকআউটের টিকেট কোরিয়া।

নিজেদের জয়ের পর অন্য ম্যাচের ফলের জন্য অপেক্ষার ওই মুহূর্তটার বর্ণনা দিলেন সন।

“এটি ছিল আমার জীবনের দীর্ঘতম ছয় মিনিট। তবে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আমরা সত্যিই ইতিবাচক ছিলাম। আমি বলেছিলাম: যদি উরুগুয়ে আরেকটি গোল করে, তবু আমি এই দলের জন্য খুবই গর্বিত এবং খুবই খুশি, কারণ আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়েছি, এখন দেখি কী হয়। আমরা স্রেফ অপেক্ষা করছিলাম, কিন্তু সেটি ছিল দীর্ঘ অপেক্ষা।”

চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপের শেষ ম্যাচে তখনকার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল কোরিয়া। জার্মানরা বিদায় নিয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকে।

কাজানের ওই ম্যাচে যোগ করা সময়ে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন সন। সেবার অবশ্য শেষ ষোলোয় খেলা হয়নি তাদের। এবার কি চার বছর আগের কথা মনে পড়ছিল সনের? 

“এবারের সময়টা অন্যরকম ছিল। আমরা অন্য ম্যাচের ফলের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি চার বছর আগের কথা ভাবিনি, কারণ আমি খুব খুশি ছিলাম, ওই মুহূর্তে আমি খুব গর্বিত ছিলাম।”

চোটের কারণে একটা সময় কাতার আসরে সনের খেলা নিয়ে জেগেছিল শঙ্কা। টটেনহ্যাম হটস্পারের এই ফরোয়ার্ড এখন প্রথমবার বিশ্বকাপের নকআউটে খেলার সামনে দাঁড়িয়ে। আগামী সোমবার শেষ ষোলোয় ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে কোরিয়া।