আগের ম্যাচেও মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। সমর্থকদের ঢল নেমেছিল দিয়েগো আরমান্দো মারাদোনা স্টেডিয়ামে, কিন্তু ড্রয়ে সেদিন বিলম্বিত হয় উৎসব। এবার আর হতাশার পুনরাবৃত্তি নয়। শঙ্কার মেঘ কিছুটা জমেছিল বটে, কিন্তু তা উড়িয়ে শিরোপা উৎসব শুরু করল নাপোলি। ৩৩ বছরের অপেক্ষাও ফুরাল নেপলসবাসীর।
বৃহস্পতিবার রাতে উদিনেসের মাঠে ১-১ ড্র করে নাপোলি। এই ড্রয়ে ৩৩ ম্যাচে ৮০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখে শিরোপা নিশ্চিত করল লুসিয়ানো স্পাল্লেত্তির দল।
উদিনেসের মাঠে হওয়া উৎসবের ঢেউ আছড়ে পড়ল নেপলসেও, বিশেষ করে নাপোলির মাঠে। ফুটবল ইতালিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ম্যাচের জন্য ১০ হাজারের মতো নাপোলি সমর্থক হাজির ছিলেন প্রতিপক্ষের মাঠে। আর ৫০ হাজারেরও বেশি সমর্থক আরমান্দো স্টেডিয়ামে জমায়েত হয়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখেন খেলা।
শুরুটা নাপোলির জন্য ছিল শঙ্কা জাগানিয়া। ত্রয়োদশ মিনিটেই গোল হজম করে বসে তারা। উদোগির ছোট পাস বক্সে প্রথম স্পর্শে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন সান্দি লোভরিচ। রেফারি ভিএআর চেক করলেও বদলায়নি সিদ্ধান্ত।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে সমতায় ফেরে নাপোলি। গোলরক্ষক মার্কো সিলভেস্ত্রি কর্নার ফেরালেও বল গিয়ে পড়ে ভিক্টর ওসিমহেনের পায়ে। জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
চলতি লিগে নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ডের গোল হলো ২২টি। তিন গোল কম নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন ইন্টার মিলানের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেস।
সমতা ফেরানোর উচ্ছ্বাসে যেন শিরোপা উৎসবও এক চিলতে সেরে নেয় নাপোলি সমর্থকরা। গ্যালারি থেকে বাজি পোড়ানোর ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
৭১তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত নাপোলি। কিন্তু পিওতর জিয়েলিন্সকির শট হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। বাকিটা সময় ব্যবধান বাড়ানোর চেয়ে সমতা ধরে রাখার দিকেই মনোযোগ ছিল তাদের।
এরপর শুরু হয় মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা। প্রতিটি মুহূর্তে ঘড়ির কাঁটায় চোখ রাখতে দেখা যাচ্ছিল দলটির সমর্থকদের। কোচ স্পাল্লেত্তিও ডাগআউটে চোখে-মুখে চিন্তার ভাঁজ নিয়ে পায়চারি করে যাচ্ছিলেন অনবরত।
নির্ধারিত নব্বই মিনিটের পর আরও অতিরিক্ত তিন মিনিটের খেলা শেষ হতেই বাজল শেষের বাঁশি। গ্যালারি থেকে স্রোতের মতো নাপোলির সমর্থকরা নেমে এলেন মাঠে, কোচ-খেলোয়াড়দের সঙ্গে মেতে উঠলেন বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে।
নেপলসেও নতুন করে ফিরে এলো মারাদোনার স্মৃতি। এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির হাত ধরেই ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে সবশেষ লিগ শিরোপা জিতেছিল নাপোলি। প্রায় তিন যুগ পর ওসিমহেনরা তাদের ফিরিয়ে দিলেন সেই সুখস্মৃতি।