মিলিতাওয়ের আত্মঘাতী গোলে বার্সার জয়

রক্ষণ জমাট রেখে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরল শাভি এর্নান্দেসের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2023, 09:55 PM
Updated : 2 March 2023, 09:55 PM

একের পর এক আক্রমণেও সুবিধা করতে পারল না রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণে আছড়ে পড়ল তাদের সব প্রচেষ্টা। এর মাঝেই শুরুর দিকে এদের মিলিতাওয়ের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে গেল বার্সেলোনা। বাকিটা সময় রক্ষণাত্মক ফুটবলে ব্যবধান ধরে রেখে কোপা দেল রের ফাইনালে ওঠার পথে এগিয়ে গেল শাভি এর্নান্দেসের দল।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছে কাতালান ক্লাবটি।

এই নিয়ে টানা দুটি ক্লাসিকো জিতল তারা, জানুয়ারিতে রিয়ালকে হারিয়েই স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতেছিল বার্সেলোনা।

টানা দুই ম্যাচে জয়শূন্য রইলো রিয়াল। গত সপ্তাহে লা লিগায় আতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছিল তারা।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউরোপা লিগের প্লে অফে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হেরে বাদ পড়ে যায় বার্সেলোনা। এর তিন দিন পর লা লিগায় দুর্বল আলমেরিয়ার বিপক্ষে ভীষণ বাজে পারফরম্যান্স করে হেরে বসে শাভির দল।

টানা দুই হারের ধাক্কা সামলে কক্ষপথে ফেরার অভিযানে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠে শুরুতে বেশ এলোমেলো দেখা যায় বার্সেলোনাকে। আক্রমণে রবের্ত লেভানদোভস্কির শূন্যতা প্রকট হয়ে ওঠে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে। তবে খেলার ধারার বিপরীতে শুরুর দিকেই গোল পেয়ে যায় তারা।

প্রথম থেকে অধিকাংশ সময় বল দখলে রেখে আক্রমণ করতে থাকে রিয়াল। খুব ভালো সুযোগ যদিও তৈরি করতে পারছিল না তারা। দ্বাদশ মিনিটে বাঁ দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রস বুক দিয়ে নামিয়ে কোনাকুনি শটে জালে বল পাঠান করিম বেনজেমা। তবে পরিষ্কার অফসাইডে ছিলেন তিনি।

২৬তম মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণেই এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডি-বক্সে বল পেয়ে কোত দি ভোয়ার মিডফিল্ডার ফঁক কেসিয়ের নেওয়া শট কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকান থিবো কোর্তোয়া। তবে ফিরতি বল ডিফেন্ডার এদের মিলিতাওয়ের পায়ে লেগে জালে জড়ায়।

রাফিনিয়া অফসাইডে থাকায় শুরুতে গোল দেননি রেফারি। তবে তার মুভ বলের দিকে না থাকায় ভিএআরে আসে গোলের সিদ্ধান্ত।

এরপরও খেলার ধারায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। আক্রমণ করতে থাকে রিয়াল, তবে বার্সেলোনার জমাট রক্ষণ ভেদ করে কোনো শটই নিতে পারছিল না তারা।

প্রথমার্ধে গোলের উদ্দেশ্যে পাঁচটি শট নিলেও প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে সেভাবে ভাবাতে পারেনি বেনজেমা-ভিনিসিউসরা। তাদের একটি শটও যে লক্ষ্যে ছিল না। বিপরীতে ঘর সামলানোয় মনোযোগী বার্সেলোনা ওই একটি শটই নিতে পারে প্রথম ৪৫ মিনিটে।

দ্বিতীয়ার্ধেও একইরকম আক্রমণাত্মক শুরু করে রিয়াল। ৪৯তম মিনিটে ফেদেরিকো ভালভেরদের পাস বক্সে পেয়ে ভিনিসিউসের নেওয়া শট রক্ষণে প্রতিহত হয়।

৭২তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোলবঞ্চিত হয় বার্সেলোনা। ডি-বক্সে অরক্ষিত কেসিয়ের শট লক্ষ্যেই ছিল; কিন্তু মাঝপথে সতীর্থ আনসু ফাতির পায়ে লাগে বল। দুই মিনিট আগে বদলি নামা স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের এটাই ছিল বলে প্রথম ছোঁয়া, কী দুর্ভাগ্যজনক!

নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে দূর থেকে চেষ্টা করেন রদ্রিগো। তবে নাচো ফের্নান্দেসের বদলি নামা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের শটও লক্ষ্যে থাকেনি।   

ম্যাচজুড়ে এত চেষ্টার পরও রিয়াল যে গোল পায়নি, তার কারণ তাদের ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতাও। পুরো ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে ১৩টি শট নিয়েছে তারা, কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেনি একটিও! বিপরীতে, কেবল ৩৫ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা বার্সেলোনা চার শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে দুটি।

আগামী ৫ এপ্রিল কাম্প নউয়ে হবে ফিরতি লেগ।

অবশ্য তার আগে আরেকবার দেখা হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দলের। আগামী ১৯ মার্চ লা লিগাতেও ঘরের মাঠে খেলবে বার্সেলোনা।